বাংলাদেশে বিদেশি শিল্প-কারখানা স্থানান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে: শিল্পমন্ত্রী

২৭ আগস্ট ২০২০, ০৫:০১ পিএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পিএম


বাংলাদেশে বিদেশি শিল্প-কারখানা স্থানান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে: শিল্পমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বিদেশি শিল্প-কারখানা স্থানান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, এ সুযোগ কাজে লাগাতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুর পাশাপাশি অন্যান্য নিয়ম-কানুন সহজ করতে হবে।

শিল্পমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) ২০২০-২০২১ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন। শিল্প সচিব কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও কর্পোরেশনের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকরা ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিপুল শ্রমশক্তি, অভ্যন্তরীণ বিশাল বাজার এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক সিদ্ধান্ত ও দূরদর্শীতা তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের মনোবল চাঙ্গা করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও শিল্প উৎপাদন কার্যক্রম গতিশীল হয়েছে। বাংলাদেশ সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট অর্জনেও সাফল্যের সাক্ষর রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য বিসিক শিল্পনগরি এবং বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য চিনিকলের অব্যবহৃত জমিতে শিল্প স্থাপনের সুযোগ করে দিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে চাঙ্গা করতে হবে। বর্তমান সরকার দেশেই নিজস্ব ব্র্যান্ডের গাড়ি উৎপাদন করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে অটোমোবাইল শিল্পনীতি হচ্ছে। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আমদানিবিকল্প পণ্য উৎপাদনে হালকা প্রকৌশল শিল্পখাতের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগানো হবে।

সভায় জানানো হয়, বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে তদারকি করতে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ৭টি মনিটরিং টীম গঠন করা হয়েছে। এসব টীম প্রতিমাসে সরেজমিনে প্রকল্পের উন্নয়ন কার্যক্রম এবং সমস্যা চিহ্নিত করে এডিপি পর্যালোচনা সভায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে। এর ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট যে কোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, চিনিকলসমূহের চিনি উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে আখের উন্নত জাত সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রতিমন্ত্রী অডিট টিম গঠন করে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য কর্পোরেশনের অর্থনৈতিক অবস্থা যাচাইয়ের পরামর্শ প্রদান করেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন নতুন চিনিকল স্থাপনের লক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাবার নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, বিসিক শিল্পনগরীসমূহে রাস্তাঘাটসহ উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় পরিষেবাসমূহের মান যাতে অক্ষুণ্ন থাকে সেটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এসময় ডিপিএম'র মাধ্যমে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে সেগুলোর বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিদের প্রকল্প অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।

সভাপতির বক্তৃতায় শিল্প সচিব কে এম আলী আজম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন। দেশের অর্থনীতি বর্তমানে টেক অফ স্টেজে রয়েছে উল্লেখ করে শিল্পসচিব এই সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

বিটাকের ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত

পরে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) এর উদ্যোগে গৃহীত ভিশনারি মাস্টার প্ল্যান ২০৩০ এর ভ্যালিডেশন ওয়ার্কশপের উদ্বোধন অনুষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০ এর সাথে সমন্বয় রেখে বিটাকের উদ্যোগে শিল্প উন্নয়ন গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী জনশক্তি তৈরিতে বিটাককে সর্বাধুনিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রণয়নের পরামর্শ দেন। কর্মশালায় জানানো হয়,,যুগের চাহিদা অনুসারে দক্ষ চতুর্থ জনগোষ্ঠী সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্কে ১০০ একর জায়গায় বিটাকের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিকে একটি অত্যাধুনিক কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা হবে।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও