বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রয়েছে: শিল্পমন্ত্রী

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫১ এএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম


বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রয়েছে: শিল্পমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রয়েছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, সম্প্রতি দু’দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সফর বিনিময়ের ফলে এটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অধিক শক্তিশালী। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি ২০২১ সাল নাগাদ ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শিল্পমন্ত্রী সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

বিসিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট গাজী গোলাম মর্তুজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এনডিসি, বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের ইকোনোমিক ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর লিউ জেনহুয়া বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। এতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান মৃধা বেনু স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। চীন বর্তমানে বাংলাদেশের আমদানি পণ্যের সবচেয়ে বড় উৎস। একই সাথে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ চীনের তৃতীয় বৃহৎ রপ্তানির বাজার বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। দেশের শিল্পখাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে গভীর সমুদ্র বন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হলে, বাংলাদেশ আঞ্চলিক বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্রে পরিণত হবে।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ভারসাম্য সব সময় চীনের অনুকূলে রয়েছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে হবে। চীনে চারকল রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমছে। দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে কাজ করছে। বাংলাদেশের জ্বালানি ও অবকাঠামোখাতে চীনের বিরাট বিনিয়োগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি এদেশের উদীয়মান শিল্পখাতে সরাসরি বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে চীনা উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বায়নের ফলে দ্বিপাক্ষিক লেন-দেনের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। বাংলাদেশে ৫ লাখেরও বেশি চীনা জনশক্তি কাজ করছে। এর বিনিময়ে বাংলাদেশের সকল পণ্য চীনে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়ার দাবি রাখে। চীন বর্তমানে ভিয়েতনাম ও মায়ারমার থেকে অনেক পণ্য আমদানি করছে, যা বাংলাদেশ থেকেও আমদানি করা সম্ভব। তিনি বাংলাদেশের সাথে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি বিবেচনায় এনে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ থেকে অধিক পরিমাণে পণ্য আমদানির জন্য চীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও