দেশে মোটর সাইকেলের উৎপাদন বছরে ১০ লাখে উন্নীত করা হবে

২৩ জুন ২০১৯, ০৪:৫৩ পিএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৪ পিএম


দেশে মোটর সাইকেলের উৎপাদন বছরে ১০ লাখে উন্নীত করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: 
দেশে ২০২৭ সাল নাগাদ মোটর সাইকেলের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি একই সময়ের মধ্যে এ শিল্পখাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের পরিমাণ ১৫ লাখে উন্নীত করা হবে। এসব লক্ষ্য অর্জনে শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতি সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে।

মোটর সাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৮ বাস্তবায়নের জন্য গঠিত সমন্বয় পরিষদের সভায় আজ রবিবার (২৩ জুন) এ তথ্য জানানো হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। এ সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় শিল্প সচিব মোঃ আবদুল হালিম, শিল্প মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিডা, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিআরটিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসটিআই, বিটাক, বিএসইসি ও বিসিকের প্রধান, বাংলাদেশ মোটর সাইকেল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতিসহ মোটর সাইকেল উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মোটর সাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় দেশিয় মোটর সাইকেল শিল্পের বুনিয়াদ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ভেন্ডর উন্নয়ন, অটোমোবাইল খাতের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, মোটর সাইকেল পশ্চাৎ-সংযোগ শিল্প পার্ক ও বাংলাদেশ অটোমোটিভ ইন্সটিটিউট স্থাপন, মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানো ও ব্যবস্থাপনা যুগোপযোগীকরণসহ অন্যান্য বিষয় আলোচনা হয়।

এসময় মোটর সাইকেল উৎপাদনকারী শিল্প উদ্যোক্তারা এ শিল্প বিকাশের পেছনে প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যা তুলে ধরেন। এসময় তারা বলেন, ইতোমধ্যে মোটর সাইকেল শিল্পখাতে উদ্যোক্তারা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মোটর সাইকেলের আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের শুল্ক হার তুলনামূলক কম হওয়ায় দেশিয় খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী ভেন্ডররা কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে। এছাড়া, পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানিক সুযোগের সীমাবদ্ধতা, প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় অধিক রেজিস্ট্রেশন ব্যয়, ঘন ঘন এসআরও জারি ও শুল্ক নীতির পরিবর্তন, সিকেডি ও সিবিইউ মোটর সাইকেল আমদানিতে ক্রমান্বয়ে শুল্ক ব্যবধান হ্রাস পাওয়ায় উদীয়মান এ শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।

সভায় মোটর সাইকেল শিল্প উদ্যোক্তারা দেশে দক্ষ ভেন্ডর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্কহার বৃদ্ধি, তৈরি মোটর সাইকেল রপ্তানিতে প্রণোদনা দান এবং এসএমই অর্থায়নের আওতায় এ শিল্পখাতে ব্যাংক ঋণের সুযোগ তৈরির দাবি জানান। তারা দেশে উৎপাদিত মোটর সাইকেলের গুণগতমান নিশ্চিতকল্পে একটি মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি এখাতে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরামর্শ দেন। তারা প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন খরচ নির্ধারণের জন্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এসময় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্পোন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার মোটর সাইকেল উৎপাদনকারী শিল্পকে সম্ভব সব ধরণের নীতি সহায়তা দেবে। এ শিল্পে উৎপাদিত যন্ত্রাংশের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই এবং বিটাক উদ্যোক্তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। তিনি নতুন কারখানা স্থাপনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইকিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উদ্যোক্তাদের নির্দেশনা দেন। জনকল্যাণে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রয়োজন হলেও অযৌক্তিক রেজিস্ট্রেশন ব্যয় বাড়িয়ে জনগণকে কষ্ট দেয়া সরকারের লক্ষ্য নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, দেশিয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় আমদানিকৃত পণ্যে অধিকহারে কর আরোপের পাশাপাশি দেশিয় উৎপাদকদের কর রেয়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশনখাতে কর ফাঁকি বন্ধ করতে বিক্রিত মোটর সাইকেলের তালিকা স্থানীয় জেলা প্রশাসক, বিআরটিএ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রেরণের জন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্শেদনা দেন।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও