ঈদে বাজারে আসছে ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট

০২ মে ২০২০, ০৫:০১ পিএম | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ এএম


ঈদে বাজারে আসছে ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রতিবছর রোজা ও ঈদ উপলক্ষে বাড়তি কেনাকাটায় নগদ টাকার চাহিদা বাড়ে। ঈদের আগের মাসের বেতন ও বোনাসের টাকা নতুন নোটে পাওয়ার আশা থাকে চাকরিজীবীদের। এ ছাড়া ঈদের আগে সালামি ও বকশিশের জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করে সাধারণ মানুষ। মানুষের এই চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রতিবছর ঈদের আগে নতুন টাকা বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। করোনা মহামারির কারণে সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেছে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই রোজা, ঈদ ও করোনাকালীন অর্থনীতির চাহিদা মেটাতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এবার করোনার ঝুঁকি এড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে নতুন টাকা বিনিময়ের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার চাপ বেড়েছে অনেক আগে থেকেই। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো প্রতিদিনই নগদ টাকার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে। রেপো ও বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনা সংকট দীর্ঘায়িত হলে সামনে নগদ টাকার চাহিদা আরো বাড়বে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন শুরু হলে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে নগদ টাকার চাহিদাও বাড়বে।

এ ছাড়া রোজা ও ঈদ উপলক্ষে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে নগদ টাকার চাহিদা বেশি হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, রোজা, ঈদ ও করোনাকালীন অর্থনীতির চাহিদা মাথায় রেখেই এবার ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এটি গত বছরের ঈদের চেয়ে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বেশি।

জানা গেছে, সারা বছর ৪০ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ বিভিন্ন মূল্যমানের নোট প্রয়োজন হয়। এর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রয়োজন হয় দুই ঈদে। এর মানে দুই ঈদ মিলে ২৮ থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকায় চাহিদা মিটে যায়। তবে এবার করোনা সংকটের কারণে নগদ টাকার চাহিদা বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এক লাখ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন শুরু হলে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বাড়বে। এই মুদ্রা সরবরাহের একটি অংশ নগদ টাকা হিসেবে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সারা বছর বাজারে নোট সরবরাহ করে থাকে। তবে ঈদের আগে চাহিদা বেশি থাকে বলে এ সময় বেশি নতুন নোট ছাড়া হয়। এবার পরিস্থিতি ব্যতিক্রম। সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই এবার ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রি-ইস্যু নোটও থাকবে।

এদিকে এবার করোনার কারণে ঈদের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে লাইনে দাঁড়িয়ে নতুন নোট বিনিময় করে নেওয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন ভাংতি বা নতুন টাকা বিনিময়ের সময় নয়। লাইন ধরে মত বিনিময় করলে উল্টো প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও