ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি রিজভির

২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০১:৫৬ পিএম | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ এএম


ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি রিজভির

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়পাল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্টের মাধ্যমে একটি কর্তৃত্ববাদী পরিবেশ কায়েম করার জন্য ছাত্রলীগ হামলা নির্যাতনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। আর হলগুলোতে তারা মিনি কনসেনট্রেশান ক্যাম্প তৈরি করে রেখেছে।

তিনি বলেন, কয়দিন আগে দুর্নীতি টেন্ডারবাজী চাঁদাবাজীর কারণে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বহিস্কার করেছে চাঁদাবাজলীগের সভাপতি -সাধারণ সম্পাদককে। আমরা এই সন্ত্রাসী সংগঠন নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করার আহবান জানাই।

রিজভী আরও বলেন, গত একদশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের প্রায় প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ যেভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে এতে স্পষ্টতঃই প্রতীয়মান হয়েছে, তারা রাজনৈতিক সংস্কৃতিও শেখেনি। একটি ভালো পারিবারিক মূল্যবোধেও বেড়ে উঠেছে বলে মনে হয় না। যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকার জন্য ক্ষমতাসীন সরকার যেভাবে ছাত্রদেরকে প্রতিহিংসাপরায়ণ করে তুলছে এটি কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিদিনই গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগের অনুসারী এই সংগঠনটির চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ধর্ষন, হত্যা, দখলের খবর প্রকাশ হচ্ছে। তাদের আচরণ প্রমাণ করে ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ড ছাত্রলীগের হাতে বই-খাতার বদলে অস্ত্র বন্দুক চাপাতি তুলে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, একটি সফল কাউন্সিলে নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদল নতুন উদ্যোমে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে-যা ছাত্রলীগ সহ্য করতে পারছে না। কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল। যখন ছাত্রদল সারাদেশের কাউন্সিরদের দ্বারা নির্বাচিত হয়েছে, তখন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ৮৬ কোটি টাকার চাঁদাবাজির খবর সারা দেশকে চমকিয়ে দিয়েছে। একদিকে ছাত্রদলের গণতন্ত্র চর্চার প্রশংসা আর অন্যদিকে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিতে দেশবাসীর কাছে যেভাবে হেয় হয়েছে সেটিকে ঢাকার জন্যই এখন তারা সন্ত্রাসীর পথ অবলম্বন করছে। ফলে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত ছাত্রদলকে তারা সহ্য করতে পারছে না।

রিজভী বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটি গঠন, শোকজ নোটিশ ছাড়া তাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দেয়া আবার দুই জনকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব প্রদান সব কিছু অবৈধ। অথচ আদালত এসব বিষয় নিয়ে নিশ্চুপ। আদালত যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতো তাহলে আরপিও ভঙ্গ এবং দস্যূবৃত্তিক কর্মকাণন্ড আমলে নিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্তি করে দিতো। আওয়ামীলীগ হাইকমান্ডকে শোকজ করতো। মিডনাইট ভোট ডাকাতি করার পর অবৈধ নির্বাচন ও ভূয়া সরকারকে বাতিল ঘোষণা করতো। শোভন-রাব্বানীর ৮৬ কোটি টাকার চাঁদাবাজীর ঘটনায় ব্যবস্থা নিতো। ৬০ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে আদেশ দিতো। ব্যাংক ডাকাত, শেয়ার বাজার লুটেরাগণ আদালতের নজরে আসতো। বাংলাদেশকে ফোকলা করে এই সরকারের যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো। কিন্তু তা না করে আদালত পড়ে আছে বিএনপিকে নিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল নিজেরা এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছে, তার সবই আইনসম্মত। ছাত্রদল একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণ করেছে। কাউন্সিলারদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এই কমিটি। এটা রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নব্যবাকশালীদের ভোট ডাকাতি করে সরকার গঠনের মতো অবৈধ কিছু নয়। আইনের বিধানে, রাজনৈতিক দল বা তাদের কর্মকান্ড সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না, এমন একাধিক বার উচ্চ আদালতের রায় রয়েছে।ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বিদেশে টাকা পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে দিচ্ছে। আর জনগনের দৃষ্টি ভিন্নদিকে ফেরাতে লোক দেখানো অভিযান চালাচ্ছে সরকার। গত দুই দিনে অবৈধ অর্থ, দুর্নীতি -মাদক-জুয়া-ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান ফিকে হয়ে সরকারের আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে।’

ছাত্রদলের কর্মকান্ডে আদালতের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে রিজভী বলেন, আমরা এ বিষয়ে এখনও অফিসিয়ালি কিছু পাইনি।’


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও