আন্দোলনের নামে হামলা-ভাংচুর, বোমাবাজি করতে দেয়া হবে না:স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

১৩ আগস্ট ২০২২, ০৫:৪৯ পিএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৯ এএম


আন্দোলনের নামে হামলা-ভাংচুর, বোমাবাজি করতে দেয়া হবে না:স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আন্দোলনের নামে কেউ হামলা-ভাংচুর ও বোমাবাজি করে জনজীবন অতিষ্ঠ করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আন্দোলন গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এই অধিকারের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার অধিকার কারো নেই। এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শেষ বা ধ্বংস হয়ে গেলো, মানবতা ভূলুণ্ঠিত হলো বলে যারা চিৎকার করছেন। তারা প্রমাণ করে দেন কিভাবে দেশ শেষ হয়ে গেল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন লড়াই-সংগ্রাম করে এই দেশ স্বাধীন করেছেন মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন বলে। সেই স্বপ্ন পূরণে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আর স্বাধীনতা বিরোধী চক্র দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। শেখ হাসিনার হাতে যতদিন দেশ থাকবে, বাংলাদেশ পথ হারাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বের মানুষ কষ্টে আছে। আমাদের দেশের মানুষের উপরেও প্রভাব পড়েছে। করোনা সংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পৃথিবীতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। জ্বালানির বৃদ্ধি করা হয়েছে আসন্ন মহাসংকট মোকাবেলা করার জন্য। এটা সাময়িক। এই সংকট মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে ইউকে তে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসবে বলে গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। আরও অনেক দেশে সংকট তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল ও অন্যান্য দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করলে একথা অস্বীকার করা যাবে না যে আমরা ভালো আছি।

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা সব সময় মানুষের কল্যাণ চান। তিনি যখন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন সেটা অবশ্যই জনকল্যাণমূলক। জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে বলেই উন্নয়ন সহযোগী দেশ/সংস্থা লোন দিতে আগ্রহী হয়। দেশ যদি লোন পরিশোধ না করতে পারে তাহলে জেনে শুনে কেউ তো অর্থ দিবে না। আবার বাংলাদেশ শ্রীলংকা হবে এটা জেনে কখনো কেউ লোন দেয়ার কথা চিন্তাও করবে না। দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে বলে যারা অপপ্রচার চালিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করছেন তাদেরকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান অতিথি বলেন, বাজেট ঘোষণার আগে বিএনপির সাইফুর রহমান সাহেবরা ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্যারিস কনসোর্টিয়াম গিয়ে বসে থাকতো টাকার জন্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ট্র্যাডিশন বন্ধ করে দিয়ে নিজস্ব অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য গুরুত্ব দিয়েছেন। উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘ মেয়াদি পথ নকশা তৈরি করেছেন। যার সুফল মানুষ ভোগ করছেন।

মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা প্রথম ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ অন্যান্য সকল‌ খাতে উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর তা বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশ পরিচালনা করছেন।

মোঃ তাজুল ইসলাম আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে হলে শিল্প-কলকারখানা প্রয়োজন। এর জন্য দরকার বিদ্যুৎ। শেখ হাসিনার সরকার দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। এসব অর্জন একটি গোষ্ঠীর ভালো লাগেনা। যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, যারা দেশের উন্নয়ন চায়না, দেশকে ধ্বংস করতে চায় তাদের পক্ষে কথা বললে তারা খুশি হয়। সীমাবদ্ধতা থাকবে এর মধ্যে ও যাদের ভেতর স্বপ্ন পূরণের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকবে থাকতে হবে।

উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ হাওলাদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান বীরুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রেবেকা সুলতানা এবং দেশের অধিকাংশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও