স্বামীর হাতেই খুন হয় সম্পা, নেপথ্যে পরকীয়া

১২ জুন ২০১৯, ০৩:৫০ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১০ এএম


স্বামীর হাতেই খুন হয় সম্পা, নেপথ্যে পরকীয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিলেও আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিক সম্পা বেগমকে (২৩) হত্যার চার মাস পর এর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনাটিকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে প্রচার করলেও পিবিআই এর তদন্তে বের হয়ে এসেছে পোশাক শ্রমিক সম্পাকে হত্যা করেছে তার স্বামী বেলাল মিয়া (২৬)।

এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী বেলাল মিয়া আজ বুধবার (১২ জুন) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। এর আগে মঙ্গলবার (১১ জুন) ভোরে গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুরের মনোহরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই ঢাকা জেলা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত বেলাল একই এলাকার হারুন অর রশীদের ছেলে।

আজ বুধবার পিবিআই ঢাকা জেলা থেকে গনমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, সম্পা ছিল আসামী বেলালের খালাতো বোন। পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়। ঢাকার আশুলিয়ার ওই বাসায় তারা দেড় বছর ধরে থাকতো। সম্পা একটি পোশাক কারখানায় এবং বেলাল মিয়া একটি ব্যাগ তৈরির কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। তাদের পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে তামান্না গ্রামের বাড়ি থাকতো। বিয়ের পর থেকে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলে আসছিল। এর জের ধরে মামলার ঘটনার তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩.৩০ থেকে সন্ধ্যা অনুমান ৭.৩০ ঘটিকার মধ্যে ভিকটিমের স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে নিহতের চাচা এজাহারে উল্লেখ করেন।

মামলাটির তদন্তকারী অফিসার পিবিআই ঢাকা জেলার সাব ইন্সপেক্টর সালেহ ইমরান জানান, নিহতের স্বামী শুরু থেকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে৷ এমনকি ঢাকা থেকে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ বাড়ি নিয়ে নিয়ে গিয়ে সাথে থেকে লাশ দাফনও করে বেলাল। ঘটনার একদিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারি নিহতের চাচা শহীদুল মন্ডল নিহতের স্বামী বেলাল মিয়াকে আসামী করে মামলা করলে আত্মগোপনে চলে যায় বেলাল মিয়া৷ মামলাটি প্রথমে আশুলিয়া থানা পুলিশ তদন্ত করলেও ১২ মার্চ মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই ঢাকা জেলার সাব ইন্সপেক্টর সালেহ ইমরান।

তদন্তভার পেয়ে তিন মাস পর গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর থানার মনোহরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গত ১১ মার্চ বেলাল মিয়াকে গ্রেফতার করেন তিনি৷ এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে বেলাল জানিয়েছে, সম্পার বড়বোনের স্বামী মেরাজের সাথে সম্পার অবৈধ সম্পর্ক আছে এমন সন্দেহ থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই মনোমালিন্য হত। ঘটনার দিন মিরাজ তাদের বাসায় আসায় ক্ষুব্ধ হয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সে স্ত্রীকে হত্যা করে বলে স্বীকার করেছে। তদন্তকারী অফিসার এস আই সালেহ ইমরান জানায়, ঘটনার পর বেলাল তার আত্মীয় স্বজনকে ফোন দিয়ে সে জানায় বিকেলে কথা কাটাকাটির পর এক পর্যায়ে তার অনুপস্থিতিতে সম্পা গলায় ফাঁস দিয়েছে।

এদিকে, এই ঘটনায় নিহত সম্পার বাবা হত্যা মামলাটি আর চালাতে রাজি নন। তাদের কথা, বেলালের সঙ্গে সম্পার পরিবারের মীমাংসা হয়েছে। ছোট্ট তামান্নার নামে দশ শতাংশ জমি লিখে দেওয়া হয়েছে।

এসআই সালেহ ইমরান বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই এটিতে আত্মহত্যা বলে আসছে বেলাল। সম্পার পরিবারও এখন আত্মহত্যা বলে বিশ্বাস করছে। তবে আসামি গ্রেফতারের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও