ভৈরবে মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে কিশোরকে গলা কেটে হত্যা করলো তিন সহপাঠী

৩১ মে ২০১৯, ১০:২৩ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫১ পিএম


ভৈরবে মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে কিশোরকে গলা কেটে হত্যা করলো তিন সহপাঠী

ভৈরব প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে মো. ফারদিন আলম রূপক (১৬) নামে এক ছাত্রকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। তারই তিন সহপাঠী মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

নিহত রূপক ভৈরব বাজারের সিমেন্ট ব্যবসায়ী মো.বিপ্লব মিয়ার ছেলে।  সে এ বছর ভৈরব কেবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল। 

নিখোঁজের একদিন পর শুক্রবার (৩১ মে) সকালে পৌর শহরের আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন ব্যবসায়ী হাজী আবু বক্কর সিদ্দিকের পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে পুলিশ রূপকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে। পরে এ ঘটনায় আটক তিন সহপাঠী পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।

আটককৃতরা হলো- ভৈরব পৌর শহরের ব্যবসায়ী শাহজাহান পাটোয়ারীর ছেলে আরাফাত পাটোয়ারী, কামাল মিয়ার ছেলে ফজলে রাব্বি, ওবায়েদুল কবির খান এর ছেলে রেজাউল কবির খান। এরা চারজনই  এ বছর ভৈরব কেবি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে। 

হত্যাকারীদের মধ্যে বিল্ডিং মালিকের নাতী ফজলে রাব্বি পিয়াল রয়েছে এবং বাকী দুজন তার বিল্ডিংয়ের ভাড়াটিয়া।

পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত প্রায় ৯ টার দিকে আরাফাত পাটোয়ারী তার বন্ধু রূপককে ফোন করে জরুরি কথা আছে বলে আবুবকর সিদ্দিকের বিল্ডিং এ যেতে বলে। এর আগে সে তার  দুই বন্ধু ফজলে রাব্বি পিয়াল ও রেজাউল কবিরের সাথে শলাপরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয় রুপককে ডেকে এনে তার বাবার কাছে মুক্তিপণের টাকা চাইবে। এদিকে রুপক বন্ধুর ফোন পেয়ে দ্রুত ওই বিল্ডিংয়ে চলে যায়। 

রুপক  আসার পর তিন বন্ধু মিলে তাকে ঝাপটে ধরলে সে বাচাঁর জন্য চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তার গলায় রশি দিয়ে পেঁচিয়ে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। তারপর  রূপকের গলায় ছুরি চালায় তিন সহপাঠী বন্ধু। এরপর রাতেই তিনজন মিলে বস্তায় তার লাশ ভর্তি করে ছাদে রেখে সবাই নিজ নিজ বাসায় চলে যায়। পরদিন শুক্রবার (৩১ মে) সকালে বিল্ডিং মালিক লাশের গন্ধ পেয়ে ছাদে গিয়ে বস্তাটি দেখতে পেয়ে তার নাতীসহ তিনজনকে আটক করে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করে। পরে থানা পুলিশের কাছে তিনবন্ধুই হত্যার কথা স্বীকার করে ঘটনার বিস্তারিত জানায়।

নিহত রূপকের চাচা সজীব আহমেদ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে আমার ভাতিজা নিখোঁজ। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোথাও না পেয়ে রাত দুইটায় ভৈরব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করি। এই হত্যার সাথে জড়িতদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেন তিনি।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্যই তিন বন্ধু মিলে রূপককে হত্যা করেছে বলে তারা পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে তার পরিবার মামলা করার পর অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও