মুক্তিপণের লোভে স্বামী-স্ত্রী মিলে যুবক অপহরণ, ৮ দিন পর উদ্ধার

২০ জুন ২০২০, ০৫:১৯ পিএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ পিএম


মুক্তিপণের লোভে স্বামী-স্ত্রী মিলে যুবক অপহরণ, ৮ দিন পর উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে অপহরণের ৮ দিন পর মোঃ রাসেল (২৮) নামে এক যুবককে উদ্ধার করেছে র‌্যাব ১১। শুক্রবার (১৯ জুন) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে উদ্ধার করা হয়। এসময় সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ০২ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ আল আমিন (২৪) ও ইরা ইসলাম (২২) ।

র‌্যাব জানায়, গত ১৮ জুন অপহৃত যুবক রাসেলের মা র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ বরাবর একটি অভিযোগ করেন যে, গত ১১ জুন মোঃ রাসেল (২৮) চিটাগাং রোডে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। পরবর্তীতে রাসেল বাড়িতে না ফেরায় তার মা অনেক খোঁজাখুজি করেন। ১২ জুন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন করে বলে যে, আপনার ছেলে আমাদের কাছে আটক আছে। তারা রাসেলকে জিম্মি করতঃ হত্যার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত দুই আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে, আসামীরা পরষ্পর স্বামী-স্ত্রী। তাদের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দীপ থানাধীন সাতঘরিয়া এলাকায়। তারা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য, দীর্ঘদিন ধরে তারা সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এই ধরণের অপহরণ কার্যক্রম করে আসছে। অপহরণ করার ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে থাকে, তার মধ্যে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ অন্যতম। তারা ভিকটিম মোঃ রাসেলকে অপহরণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদানসহ অন্যান্য আরও অপরাধের লোমহর্ষক বর্ননা দেয়।

রাসেল অপহরণ বিষয়ে তারা জানায়, গত ১১ জুন নারায়ণগঞ্জে চিটাগাং রোড থেকে রাসেলকে অপহরণের উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে চেতনা নাশক ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে অবচেতন করে তাদের ভাড়া করা একটি ফ্লাট বাসায় নিয়ে যায়। উক্ত বাসায় একটি গোপন কক্ষের ভিতর হাত-পা ও চোখ বেঁধে রাসেলকে মারধর করাসহ বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে এবং মুক্তিপণের ২ লক্ষ টাকার জন্য রাসেলের পরিবারের কাছে ফোন করে এবং এই বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য রাসেলের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়।


অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা রাসেলের মুখের ভিতর কাপড় ঢুকিয়ে দেয় এবং গামছা দিয়ে চোখ, মুখ, হাত-পা বেধে লাঠি ও কাঠের তৈরি ব্রাশ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সুই দিয়ে খোঁচায়। রাসেলের পরিবার কোনো উপায় না পেয়ে রাসেল জীবন বাঁচাতে ১৫ জুন রাতে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা তাদের কাছে পাঠায় এবং বাকী টাকা নগদে পরিশোধ করবে বলে জানায়।


পরবর্তীতে ভিকটিম রাসেলের মা র‌্যাব-১১ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করে। যার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ গোয়েন্দা দল কর্তৃক গোয়েন্দা নজরধারীর মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং হতে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ০২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে।


বিভাগ : বাংলাদেশ