নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করতে না পারলে সমাজ দাঁড়াতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

১২ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০৬ পিএম | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ পিএম


নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করতে না পারলে সমাজ দাঁড়াতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
একটা সমাজে যদি নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করতে না পারে, সুযোগ না পায়, তাহলে সমাজ দাঁড়াতে পারে না। তাই ধর্মের অজুহাতে মেয়েদেরকে আটকে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেট খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহিলা শ্রমিক লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী‌ বলেন, আমরা দুই পা দিয়ে হাঁটি। এক পা খোঁড়া হলে আমাদের খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই চলতে হবে। আর দুই পা ঠিক থাকলে আমরা সুস্থভাবে হাঁটতে পারি। তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) যখন ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে আসলেন, তখন কোনো পুরুষ তো প্রথমে সাহস করে এগিয়ে আসেননি এই ধর্ম প্রচার করতে। এসেছিল মেয়েরা। অর্থাৎ বিবি খাদিজাই প্রথম আসলেন এবং তিনি তার সমস্ত ধন-দৌলত দিয়ে সাহায্য করলেন এই ধর্মটা প্রচারের জন্য। সে কথাটা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে।

মহিলা শ্রমিক লীগ প্রতিষ্ঠার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কিন্তু শুধু শ্রমিক লীগই ছিল, মহিলা শ্রমিক লীগ ছিল না। আমাদের নিজেদের এরকম সংগঠন ছিল না। কিন্তু তৈরি করতে গিয়ে যে ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়… সব থেকে বড় বাধা আমাদের শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকেও যেমন আসে, আবার আওয়ামী লীগের নেতারাও জেলায় জেলায় বাধা দিতো।

বিদেশে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত সুযোগ-সুবিধা আমরা করে দেয়ার পরেও আমাদের দেশের মানুষের একটা প্রবণতা আছে- অনেক বাড়ির মেয়েরা অনেক সময় লোভে পড়ে, কিছু দালালদের খপ্পরে পড়ে বিদেশে পাড়ি জমায়, তারপর বিপদে পড়ে। বিপদে পড়ে তাদের ফিরে আসতে হয়। সেখানে লাঞ্চিত হয়। এই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আমাদের মহিলা শ্রমিক লীগের একটা দায়িত্ব আছে- সারা বাংলাদেশে মানুষের মাঝে একটা সচেতনতা সৃষ্টি করা, কেউ যেন এরকম দালালের খপ্পড়ে পড়ে বিদেশে পাড়ি না জমায়।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য হলো এর বাইরেও ঘটনা আছে। অনেক মহিলাকে আমরা উদ্ধার করেছি। বিয়ে হয়ে গেছে। বাচ্চাও হয়ে গেছে। এক সন্তানের জননী। স্বামী, শাশুড়ি, শ্বশুরবাড়ির লোক মিলে ছেলের বউকে বিক্রি করে দিয়েছে। তাকে নিয়ে গেছে একটা পরদেশে। সেখানে তার আশ্রয় হয়েছে পতিতালয়ে। এরকম খবর পেয়ে সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে।

‘এরকম অন্যায় যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং আমরা নেব। আগামীতে যেটা ধরা পড়বে, তার কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। কেন এভাবে অন্যায়ভাবে তারা মেয়েদেরকে বিক্রি করবে? আমরা সমাজের এই সমস্ত অন্ধকার দিকগুলো দূর করতে হবে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

খেলাধুলায় মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলায় আমাদের মেয়েরা কম যাচ্ছে না। ১৫ বছরের নীচে যে মেয়েরা ফুটবল খেলছে তারা তো খুব ভালো করছে। হয়তো বলা যায় তারা চ্যাম্পিয়ান হয়ে যেতে পারে আঞ্চলিক ফুটবল প্রতিযোগিতায়। ক্রিকেটে তারা ভালো করছে। বিভিন্ন খেলাধুলায় তারা চমৎকার। ক্ষেত্রবিশেষে দেখা যায়, ছেলেদের থেকে আমাদের মেয়েরাই ভালো করে। আমাদের ছেলেরাও ভালো করছে, এতে কোনো সন্দেহ নাই। মেয়েরা কিন্তু খুব দ্রুত এগোচ্ছে।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সংগঠনের সভাপতি রওশন জাহান সাথী, সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার বেগমসহ আওয়ামী লীগের জ‌্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও