ষড়যন্ত্র রুখতে সকল ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

২০ আগস্ট ২০২২, ০৯:৩৯ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম


ষড়যন্ত্র রুখতে সকল ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন,  মুসলমান ও হিন্দুসহ সকল‌ ধর্মের মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশ নিয়ে যত ষড়যন্ত্রই করুক না কেন দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না।

আজ শনিবার বিকেলে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী উৎসব-২০২২ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মালম্বীর মানুষ একসময় নিরাপত্তাহীনতায় থাকতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধসহ সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। মানুষ নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন‌ করতে পারছে। সকল‌ প্রকার বৈষম্য নিরসন করেছেন।

ধর্ম যার যার উৎসব সবার বলেও উল্লেখ করেন তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে সকল ধর্মের মানুষের জন্য। তাই সকল মানুষ সমান‌ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে এটাই স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সকল ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, আওয়ামীলীগ মানুষের কল্যাণের দল। এই দল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে। ধর্মের ভিন্নতা থাকতেই পারে। কিন্তু আমরা এক সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। সবারে রক্তের রং লাল। সকল মানুষের অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান ও নিরাপদ জীবন যাপন নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামীলীগ সৃষ্টি হয়েছে। এই দল এবং শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবে সকল মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে এবং বাংলাদেশ কখনোই পথভ্রষ্ট হবে না।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে শ্রীলংকা বানানোর জন্য একটি গোষ্ঠী প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। কারণ বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার কোন সুযোগ নেই। অযথা মানুষের মধ্যে প্যানিক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। দেশের জনগণকে এসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সতর্ক থাকতে বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার এবং দেশের নিকট থেকে ঋণ নিয়ে দেশে উন্নয়ন কাজে বিনিয়োগ করেছে। সরকার অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এসব প্রকল্প থেকে আউটপুট আসা শুরু করলে ঋণ পরিশোধ করা সহজ হবে। সকল উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশ এভাবেই নিজেদের উন্নয়ন করে থাকে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে ২০০০ সালের মধ্যেই দেশ উন্নত দেশে পরিণত হতো। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ করা হয়েছে। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ সুখী-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মোঃ তাজুল ইসলাম।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রমেন্দ্র মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান। এছাড়া অনুষ্ঠানে ভারতের মান্যবর হাইকমিশনার বিক্রম দ্বোরাইস্বামী অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

এর আগে, রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর অডিটোরিয়ামে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

সেখানে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশকে সুখী-সমৃদ্ধ ও উন্নত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য নতুন প্রজন্মকে তৈরি থাকতে হবে। আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সত্যিকারের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথ্য প্রযুক্তিতে আরো বেশি দক্ষ হওয়ার জন্য সকল শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুখে হাসি ফুটাতে সারাজীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। তিনি মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসতেন। অন্যায়ের সাথে কখনো আপোষ করেননি। একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এটাই ছিলো তাঁর অপরাধ। একারণেই ৭৫'এর ১৫ই আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু এবং শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে।

শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহিদ উল্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও