বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

২৩ মার্চ ২০২২, ০৫:৪৬ পিএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ এএম


বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে বুধবার (২৩ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু গণমাধ্যমকে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আজ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বর্ধিত মেয়াদে খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারবেন। তবে এসময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। আগের মতো এ দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।

এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়লো। খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) শেষ হবে।

কয়েকদিন আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো এবং চিকিৎসায় বিদেশে নেওয়ার জন্য তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। পরে এ আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে তা আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

গত ১৬ মার্চ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের শর্তে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে।

খালেদা জিয়ার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা রয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেখানে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান মেডিকেল বোর্ড। গত ১ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি।

গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও দুই দফা খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে যেতে হয়। ৭৬ বছর বয়সী এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

দুটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত।

রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। প্রথম দফা মুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে ওই বছরের ২৫ আগস্ট বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্থায়ী মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দ্বিতীয় দফায় গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায়।

এর মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদনও করে তার পরিবার। কিন্তু সরকার সেই প্রস্তাব আমলে না নিয়ে আরও দু-দফা মুক্তির মেয়াদ বাড়ায়, যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ)।


বিভাগ : বাংলাদেশ