বেগম জিয়ার অদক্ষতার কারণে বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ পায়নি বাংলাদেশ: এলজিআরডি মন্ত্রী

২৭ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:৫২ পিএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৪ এএম


বেগম জিয়ার অদক্ষতার কারণে বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ পায়নি বাংলাদেশ: এলজিআরডি মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশে বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের সু্যোগ আসলেও তৎকালীন সরকারের অদূরদর্শী নেতৃত্বের অভাবে তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সকল উপজেলা পরিষদে নবনির্মিত কমপ্লেক্স ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করে ৫ম/৬ষ্ঠ তলায় চার হাজার বর্গফুট ফ্লোর এরিয়া ব্যবহার বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, দেশে এক সময় সাবমেরিন ক্যাবল বিনা পয়সায় স্থাপনের সুযোগ তৈরি হলেও তৎকালীন সরকার প্রধান বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন এটির সংযোগ হলে দেশের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে এবং তথ্য পাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার অদূরদর্শিতার কারণে এই সুযোগ থেকে দেশ এবং দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু ঐ সময়ে পৃথিবীর অনেক দেশ সাব মেরিনে যুক্ত হয়ে এখন তার সুফল নিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময়ে তথ্য ও প্রযুক্তির সুফল অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনা এ খাতে বাংলাদেশ অনেক সম্ভাবনাময়ী। তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে এবং লক্ষ্যমাত্রা ২০২১, ২০৩০ এবং ২০৪১-এ পৌঁছাতে হলে সরকারের সকল অঙ্গকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি জানান একত্রে কাজ করার উদাহরণ হিসেবে আইসিটি বিভাগের সাথে স্থানীয় সরকার বিভাগের আজকের এই চুক্তি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ গার্মেন্টস শিল্প অথবা অন্য কোন শিল্প দিয়ে শুরু করলেও আজ সকল দেশ তথ্য প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদেরকে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সমানতালে চলতে হবে, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন আমেরিকা আজকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ হওয়ার ম্যাজিক হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন। এটা অনুধাবন করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সুযোগ্য পুত্র আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা এখন বাস্তবে রুপ নিয়েছে।

আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্ভবনি শক্তিতে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের ইমেজ এখন বিশ্বে অনেক উপরে উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যখন তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে বিতর্ক হয় তখন রেফারেন্স হিসেবে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয় বলেও মন্তব্য করেন মোঃ তাজুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে যখন সরকার গঠন করেন তখন এদেশে ডিজিটাল সেবা বলে তেমন কোন কিছু ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে সরকারের সব সেবা প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে।

২০২১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা নিয়ে অনেকে হাসি-ঠাট্টা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুদূর প্রসারী চিন্তা-চেতনার কারণে দেশ আজ ডিজিটালে রুপান্তরিত হয়েছে। এসময় সরকার কর্তৃক নির্মিত একটি অবকাঠামোতে দুইটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এর সভাপতিত্বে সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিটি উপজেলায় নবনির্মিত উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন Establishing Digital Connectivity (EDC) প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় নেটওয়ার্ক সুইচরুম, উপজেলার নেটওয়ার্ক, অপারেশন সেন্টার, উপজেলায় আইসিটি সার্ভিস ডেস্ক, উপজেলায় সিটির ট্রেনিং ল্যাব ও অফিস স্থাপনের জন্য একটি করে আইসিটি অবকাঠামো ও অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।


বিভাগ : বাংলাদেশ