এসএসসি পর্যন্ত পাঠ্যক্রমে বিভাজন দরকার নেই: প্রধানমন্ত্রীর

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৪:২৯ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ পিএম


এসএসসি পর্যন্ত পাঠ্যক্রমে বিভাজন দরকার নেই: প্রধানমন্ত্রীর
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞানশিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত কোনো পাঠক্রমে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষা বিভাজনের দরকার নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর উদ্যোগে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক ২০১৮’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল রাজধানীমুখী শিক্ষা নয়, শিক্ষার প্রসার সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে সরকার। শিক্ষার মান বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া গবেষণার মাধম্য সবকিছু করা যায় এটা বাস্তব। গবেষণা ছাড়া কোনো কিছুর উৎকর্ষতা লাভ করা যায় না। আর যুগের সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এজন্য বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, একটা সময় ছিল আমাদের ছেলেমেয়েদের বিজ্ঞান পড়ার দিকে আগ্রহ ছিল না। কারণ নবম শ্রেণি থেকে ভাগ করে দেয়া হয় কে কী পড়বে। আমার মনে হয় এ ভাগটা থাকার দরকার নেই। মাধ্যমিক পর্যন্ত তারা সব বিষয় পড়তে পারে। মাধ্যমিকের পরে গিয়ে বিভক্ত হয় তাহলে সেটাই ভালো। তাহলে অন্ততপক্ষে তার মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে।

বঙ্গবন্ধুর বাণী উদ্ধৃত করে শিক্ষকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, আগামী প্রজন্মের ভাগ্য শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করে। জাতির পিতার এই কথাটা আপনারা মনে রাখবেন। তারা (শিক্ষার্থীরা) যেনো সেভাবেই শিক্ষা পায়। আমাদের ছেলেমেয়েরা মেধাবী। প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে তারা আরও মেধাবী হয়ে গড়ে উঠছে। ভবিষ্যতে দেশটা কীভাবে চলবে তার একটা পরিকল্পনা আমরা রেখে যাচ্ছি। আজকে যারা শিক্ষার্থী, আগামী দিনে তারাই দেশটাকে গড়ে তুলবে।

পদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে কী কী প্রয়োজন, যা প্রয়োজন আমরা তাই করবো। শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। মেরিটাইম ও অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি করছি। আগে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, তাও করেছি। এখন প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো। বিজ্ঞান শিক্ষাকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য অনেক প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কত ছাত্র-ছাত্রী থাকবে সেটাও ঠিক করে দেওয়া হবে। প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে চাই।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বর্ণপদক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

দেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদে এবছর সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী ১৭২ জন শিক্ষার্থীর (৮৮ জন ছাত্রী ও ৮৪ জন ছাত্র) হাতে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ তুলে দেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ১৬৩ জন শিক্ষার্থীকে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও অধ্যয়নে উৎসাহ প্রদানের জন্য ইউজিসি ২০০৫ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রবর্তন করে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও