ঈদের টানা ৯ দিনের ছুটির বিষফোড়া সোমবার

২৭ মে ২০১৯, ০৩:২২ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২২ পিএম


ঈদের টানা ৯ দিনের ছুটির বিষফোড়া সোমবার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আসন্ন ঈদের টানা ৯ দিনের ছুটির মাঝখানে একটিমাত্র কর্মদিবস সোমবার বিষফোঁড়ার মতো বসে আছে। এই এক দিনকে ছুটি ঘোষণা করে কর্মহীন করলে টানা ৯ দিনের ছুটির আনন্দে ভাসবে দেশ। ঈদ-আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানুষ তখন নিশ্চিন্ত মনে ছুটিতে যেতে পারবেন গ্রামের বাড়িতে। লম্বা ছুটির কারণে রাস্তাঘাটের ওপরও তেমন চাপ থাকবে না, স্বস্তিমতো দায়িত্ব পালন করতে পারবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।

কিন্তু সোমবারের ওই কর্মদিবসকে ছুটি ঘোষণা করার কোনো প্রস্তাব দেয়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সাধারণত এ ধরনের পরিস্থিতিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীকে সংশ্লিষ্ট দিনে ছুটি ঘোষণার জন্য সারসংক্ষেপ পাঠিয়ে থাকে। কখনো কখনো সেই সারসংক্ষেপ অনুমোদন হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ফেরে। আবার কখনো কখনো অনুমোদন না হয়েই ফেরে। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবই যায়নি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি শাখার অতিরিক্ত সচিব মো. রইছ উদ্দিন গতকাল বলেন- ৩ জুন সোমবার ছুটি ঘোষণার কোনো সিগন্যাল এখনও আমরা পাইনি। তাই ছুটি ঘোষণার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই।

আগামী ৩১ মে শুক্রবার ও ১ জুন শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ২ জুন রবিবার পবিত্র শবেকদরের ছুটি। ৩ জুন সরকারি কর্মদিবস। ৪ জুন মঙ্গলবার থেকে ৬ জুন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের ছুটি। এরপর ৭ জুন শুক্রবার ও ৮ জুন শনিবার আবারও সাপ্তাহিক ছুটি। 

সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত সংস্থা-প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় ও ছুটি নির্ধারণ করে মন্ত্রিসভা। এলোকেশন অব বিজনেস অনুযায়ী ছুটির বিষয়টি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি শাখা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন সাধারণ ছুটি থাকে। এ ছাড়া এ দুই ঈদের আগের ও পরের দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকে।

এখন প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়সহ সারা দেশের সরকারি অফিসের প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ৩ জুন সোমবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি নিয়ে। অনেকে পরিকল্পনা করছেন টানা ছুটি পেতে তারা ৩ জুন ব্যক্তিগতভাবে ছুটি নেবেন। কিন্তু সেই ছুটি নিতে গেলে তাদের ঈদের আগের বা পরের ছুটিগুলোকে নিজের ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। অর্থাৎ কোনো সরকারি কর্মচারী যদি ৩ জুন সোমবার ছুটি নিতে চান, তাহলে তাকে ৩১ মে, ১ জুন ও ২ জুনও ছুটি নিতে হবে। অথবা সেই কর্মচারীকে ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ জুনও ছুটি নিতে হবে। তারা এসব ছুটিকে নৈমিত্তিক ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করতে পারবেন। সংশ্লিষ্টদের যদি নৈমিত্তিক ছুটি না থাকে, তাহলে তাদের অর্জিত ছুটির সঙ্গে এসব ছুটি সমন্বয় হবে। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে যদি ৩ জুন সোমবার ছুটির ঘোষণা দেওয়া হয়, তা হলে বিষয়টি বেশি সুবিধাজনক হয়। তখন কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ছুটি নেওয়ার বিষয়টি আর আসবে না। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে ৩ জুন ছুটি দিয়ে পরিবর্তে সাপ্তাহিক ছুটির একটি দিন অফিস খোলা রাখা যেতে পারে বলে আলোচনা হচ্ছে।

২০১৬ সালে শবেকদর, সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে ঈদুল ফিতরের ছুটি মিলিয়ে টানা ৯ দিনের ছুটির মধ্যে এক দিন অফিস খোলা ছিল। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাঝের এক দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই ছুটি ঘোষণার জন্য জনপ্রশাসন থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল।

এবার রমজান মাস ২৯ দিনের হবে ধরে নিয়ে মন্ত্রিসভা ছুটির যে তালিকা অনুমোদন করেছে, তাতে দেখানো হচ্ছে ঈদ হবে আগামী ৫ জুন বুধবার। রমজান মাস ৩০ দিনের হলে ঈদ হবে ৬ জুন বৃহস্পতিবার। ঈদ যেদিনই হোক না কেন ঈদের ছুটি শুরু হবে ৪ জুন মঙ্গলবার থেকেই।


বিভাগ : বাংলাদেশ