আগস্ট মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জন নিহত 

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৫৭ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম


আগস্ট মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জন নিহত 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের সড়ক-মহাসড়কে গত আগস্ট মাসে ৩৮৮টি দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন ৬১৮ জন। একই সময় রেলপথে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ৪১টি দুর্ঘটনায় ৮০ জন নিহত ও ৫২ জন আহত এবং ৩১ জন নিখোঁজের তথ্য পাওয়া গেছে।

সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৪৪৪টি দুর্ঘটনায় ৫৫৩জন নিহত এবং ৬৬৯ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

গেল আগস্ট মাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন ১৯৮ জন চালক, ১২৫ জন পথচারী, ৮০ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ৩৮ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহন শ্রমিক, নয়জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। তাদের মধ্যে ছয়জন পুলিশ, একজন বিমানবাহিনী, একজন সিআইডি ও একজন সেনাবাহিনীর সদস্য। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নয়জন শিক্ষক, আটজন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, তিনজন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক এবং একজন প্রকৌশলীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

গত মাসে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ২৮.৯৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২১.৬১ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ১৬.১২ শতাংশ বাস, ৮.৭৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯.৭৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭.৭১ শতাংশ নসিমন-করিমন, ৭.০৩ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয় ৪ আগস্ট। সেদিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা হয় ১৯ আগস্ট। সেদিন চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়।

 

মোট দুর্ঘটনার ৫২.৮৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৭.৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩.৯১ শতাংশ খাদে পড়ে, ৪.৮৯ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং ০.২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে এইমাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪৮.৯৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৪.৬৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.১৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২.০৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.২৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।

 

প্রতিবেদন প্রকাশকালে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও জাতীয় মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা ইজিবাইক উঠে আসায় এবং বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেলের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও বেপরোয়া চলাচল সড়ক নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এছাড়াও সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহিতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যাতিরেখে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।


বিভাগ : বাংলাদেশ