একাত্তরের মার্চ : অগ্নিঝরা দিনগুলো

১৯ মার্চ ২০২২, ০৫:৩৮ পিএম | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪২ এএম


একাত্তরের মার্চ : অগ্নিঝরা দিনগুলো

ড. মুহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী:

(পূর্ব প্রকাশের পর)

১৬ মার্চ, মঙ্গলবার: সকাল এগারটায় প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের মধ্যে এই দিন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শুরু হয়। অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের আজ ১৫তম দিবস। বেলা ১১টার কিছু আগে বঙ্গবন্ধু গাড়িতে কালো পতাকা উড়িয়ে ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনের (বর্তমানে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধা) বৈঠকে যোগ দেন। শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট ভবনের প্রধান ফটকে পৌঁছালে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনি দিয়ে তাঁকে অভিবাদন জানান। রুদ্ধদ্বার কক্ষে একান্ত আলোচনা চলে আড়াই ঘণ্টা। আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু বলেন, আলোচনা আরো চলবে। সারা দেশব্যাপী গণজাগরণ অব্যাহত থাকে। ভারত সরকার তাদের আকাশ সীমার উপর দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানগামী সকল বিদেশি বিমানের উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করে। বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন তরান্বিত করার জন্য আইনজীবি, লেখক, শিল্পী, চাকরিজীবি ও সকল শ্রেণির মেহনতি মানুষ শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন। কবি আহসান হাবিব পাকিস্তান সরকার প্রদত্ত ‘সিতারা-এ-খেদমত’ খেতাব বর্জন করেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা ও দলীয় প্রতীক নৌকা শোভিত গাড়িতে করে প্রেসিডেন্ট ভবনে যান। উপদেষ্টা ব্যতীত মুজিব-ইয়াহিয়া প্রথম রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ দিন ১৪ মার্চে যে সব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল তার ব্যাখ্যা দেয়া হয়:
(ক) জারিকৃত নির্দেশ কার্যকরি করার জন্য সরবরাহ ও পরিদর্শন ডিরেক্টরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিভিন্ন দ্রব্যাদি যেমন: সিমেন্ট, গ্যানি বস্তা, রিলিফ দ্রব্য ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য কাজ করে যাবেন।
(খ) জারিকৃত নির্দেশ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় আবগারি ও শুল্ক বিভাগ ও অন্যান্য সংস্থার কর্মচারিবৃন্দ তাদের সংশ্লিষ্ট অফিসে তাদের কাজের রিপোর্ট পেশ করবেন।

বিশেষ নির্দেশের ব্যাখ্যা:
৪ নং নির্দেশ : যে সমস্ত বৈদেশিক রাষ্ট্রের সাথে লেটার অব ক্রেডিট খোলা হয়েছে তাদের সাথে রপ্তানি বাণিজ্য চলতে পারে। তবে ২৫ নং নির্দেশের ‘এন’ ক্লোজ অনুসারে রপ্তানি বিলের অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।
৫ নং নির্দেশ : বিমান ও বিদেশী ডাকযোগে আমদানি ছাড়ানো যাবে। শুল্ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট অফিস এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংস্থা এ জন্য খোলা থাকবে।
১৬ নং নির্দেশ : আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য খালাস করার জায়গা না থাকলে খোলা জেটির উপরই খালাস করা হবে।
১৯ নং নির্দেশ : সড়ক যোগাযোগ কাজ অব্যাহত থাকবে।
২৫ নং নির্দেশ : ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশর পার্টিগুলোর প্রয়োজনে বাংলাদেশের মধ্যে কার্যকরী ব্যাংক গ্যারান্টি ও ইনডেমিনিটি বন্ড ইস্যু করতে পারবে।
৩১ নং নির্দেশ : প্রাদেশিক ট্যাক্স সমূহ পূর্বের মত দিতে হবে। কাস্টমস ও আবগারি শুল্ক এবং সেলস ট্যাক্সসহ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পরোক্ষ ট্যাক্স আদায়ের বেলায় নিম্নলিখিত নিয়ম মানতে হবে:
(ক) কাস্টমস এবং আবগারি অথবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত শুল্ক বা কর ইস্টার্ণ মার্কেন্টাইল ব্যাংক এবং ইস্টার্ণ ব্যাংকিং কর্পোরেশনের বিশেষ একাউন্টে জমা দিতে হবে।
(খ) উপরোক্ত কাজের প্রয়োজনে কাস্টমস এবং আবগারি বিভঅগের সংশি।লষ্ট সেকশন এবং অন্যান্য এজেন্সিগুলোর কাজ চলবে।

এ দিন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ ও সুশৃঙ্খল সংগ্রামের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অহিংস ও অসহযোগ আন্দোলনের যে ডাক দিয়েছেন জনগণ তার প্রতি অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছেন। ফলে সরকারের সকল শাখাসহ সকল স্তরের মানুষ গণ-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এবং বাংলাদেশের মানুষের নামে আমরা যে সব নির্দেশনাবলী জারি করেছি সেগুলো মেনে চলার জন্য জনগণ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন।

১৭ মার্চ, বুধবার: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫২তম জন্মদিন। সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। টানা আড়াই ঘন্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনা এখনো শেষ হয়নি, আলোচনা চলছে। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের বিদেশী সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি আমার জন্মদিন পালন করি না। এ দুঃখিনী বাংলায় আমার জন্মদিনই কি বা মৃত্যুদিনই বা কি?...আমার জীবন নিবেদিত জনগণের জন্য। শেখ মুজিবের বাসভবনে অত্যন্ত অনাড়ম্বর পরিবেশে তাঁর জন্মদিন পালন করা হয়। রাত পর্যন্ত দলীয় কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে শুভেচ্ছা সাক্ষাতে মিলিত হন। বায়তুল মোকাররম মসজিদে বাদ আসর মিলাদ শেষে শেখ মুজিবের দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত হয়। সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা রাইফেল চালনার প্রশিক্ষণ শুরু করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আগামী ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসকে প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঐদিন সরকারি-বেসরকারি ভবনে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হবে।

১৮ মার্চ, বৃহস্পতিবার: বঙ্গবন্ধু ও ইয়াহিয়া খানের দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর পরবর্তী আর কোনো আলোচনার সময় নির্ধারণ করা হয়নি। এ নিয়ে জনমনে উৎকণ্ঠা জন্মায়। অবশেষে রাতে ঘোষণা করা হয়, তৃতীয় দফা বৈঠক হবে কাল বেলা ১১টায়। ১৮ মার্চও ঢাকার রাজপথে দিনভর ছাত্র-শ্রমিক-জনগণের মিছিল চলতে থাকে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন সংগঠন ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য শপথ নেয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শহীদ মিনারে সাবেক বিমানসেনাদের শপথ গ্রহণ। ঢাকায় পাকিস্তান বিমানবাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকেরা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। সারা দিন ধরে মিছিলের পর মিছিল করে উৎকণ্ঠিত মানুষ বঙ্গবন্ধুকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাতে তাঁর বাসভবনে ভিড় করে। বঙ্গবন্ধু সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে বৈঠক থেকে উঠে গিয়ে সমবেতদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি সবাইকে চরম প্রস্তুতি নিয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তোমাদের ওপর আঘাত এলে তা প্রতিহত করে শত্রুর ওপর পাল্টা আঘাত হানো।’ বিপুল সংখ্যায় দেশি-বিদেশি সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। বাসভবনের সামনে জনগণের ঢল দেখিয়ে বিদেশি সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বন্ধুরা, দেখুন, আমার দেশের মানুষ আজ মুক্তির প্রতিজ্ঞায় কী অটল-অবিচল। কার সাধ্য আছে এই উত্তাল জনসমুদ্রকে রোখে?’ রাতে শেখ মুজিব সেনাবাহিনী তলব-সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রকাশ্য তদন্ত। যে তদন্ত কমিশনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আমার উত্থাপিত দাবির পরিপূরক নয়। তাই আমি এই কমিশন মেনে নিতে পারি না।’ স্বাধীন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক বিবৃতিতে আমেরিকা, বৃটেন, রাশিয়া, চীন প্রভৃতি শক্তির প্রতি তাদের সরবরাহকৃত অস্ত্রের দ্বারা বাঙালিদের হত্যা চালানোর প্রয়াস বন্ধ করার আহবান জানান। চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সাথে আলোচনায় মওলানা ভাসানী বলেন, আমার জীবনের ৮৯ বছর যাবৎ বিভিন্ন আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলাম। কিন্তু একটি সার্বজনীন দাবিতে জনগণের মধ্যে বর্তমান সময়ের মত একতা এবং সহযোগিতা কোনদিন দেখেননি।

১৯ মার্চ, শুক্রবার: এক দিন বিরতির পর ১৯ মার্চ সকালে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে তৃতীয় দফা একান্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁদের মধ্যে দেড় ঘণ্টা কথা হয়। বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিজ বাসভবনে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের জানান, পরদিন সকালে আবার বৈঠক হবে। তবে সে বৈঠক একান্ত হবে না। দলের শীর্ষ নেতারা তাঁর সঙ্গে থাকবেন। এর আগে সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে তাঁর দলের ও প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা আলোচনায় বসবেন। একজন বিদেশি সাংবাদিক জানতে চান, মানুষকে সব সময় ‘জয় বাংলা’ বলে সম্ভাষণ জানানোর কারণ কী। জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি মুসলমান। সকালে ঘুম থেকে উঠে আল্লাহকে স্মরণ করার পরই আমি জয় বাংলা বলি। মৃত্যুর সময় আমি আল্লাহর নাম নিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলে ইহধাম থেকে বিদায় নিতে চাই।’ সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে উপদেষ্টা পর্যায়ের সে বৈঠকটি বসে। তাতে আওয়ামী লীগের পক্ষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও কামাল হোসেন এবং সরকারের পক্ষে বিচারপতি এ আর কর্নেলিয়াস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান অংশ নেন। জয়দেবপুর রাজবাড়ি থেকে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙ্গালি জওয়ানদের সেনাবাহিনী ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে পাঞ্জাবি ব্রিগেডিয়ারের নেতৃত্বে সামরিক কর্তৃপক্ষ একদল সেনা জয়দেবপুর পাঠায়। সকাল ১১ টায় সেনারা জয়দেবপুরে অসহযোগ আন্দোলনকারীদের ব্যারিকেডের মধ্যে পড়লে বাঙ্গালি সৈন্যরা আন্দোলনকারী জনগণের সাথে যোগ দেন। ব্যারিকেড সরাতে ও জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গুলিবর্ষণ করলে ১২৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙ্গালি সৈন্যদের এটি প্রথম বিদ্রোহ।

২০ মার্চ, শনিবার: প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ছয় শীর্ষস্থানীয় সহকর্মী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, খন্দকার মোশতাক আহমদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, তাজউদ্দীন আহমদ ও কামাল হোসেন। ইয়াহিয়ার সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি কর্নেলিয়াস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান। বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু ৩২ নম্বরে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার তরফে আলোচনার দরজা সবসময় খোলা। তবে এ আলোচনা অনির্দিষ্টকাল চলবে না।’ ঢাকায় সামরিক জান্তার জেনারেলদের বৈঠকে বাঙালি হত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ অনুমোদন। জয়দেবপুরে নিরস্ত্র মানুষের ওপর সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটির প্রতি তিনি প্রেসিডেন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন বলে কথা দিয়েছেন। রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিবৃতিতে বলেন, মুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। জনগণের প্রতি তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে নিজেদের আন্দোলন প্রতিটি গ্রাম, শহর, নগরের নারী-পুরুষ, শিশুকে বাংলাদেশের দাবির পেছনে সুসংগঠিত করেছে। বাংলাদেশের জনগণ সমগ্র বিশ্বের স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষের হৃদয় জয় করেছে।’ সারা দিন সভা-সমাবেশে ঢাকা উত্তাল হয়ে ওঠে। মিছিলের পর মিছিল ছুটে চলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নৌবাহিনীর সাবেক সৈনিকদের সমাবেশ। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাবেক বাঙালি নৌসেনাদের সমাবেশে মুক্তিসংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে একটি সম্মিলিত মুক্তিবাহিনী কমান্ড গঠনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক বাঙালি সেনাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশ শেষে বাঙালি নৌ সেনারা কুচকাওয়াজ করে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাসভবনে যান। বিভিন্ন সংগঠন শহীদ মিনারে সমাবেশ ও শপথ অনুষ্ঠানের পর একে একে শোভাযাত্রা নিয়ে শেখ মুজিবের বাসভবনে গিয়ে সমবেত হয়। তাদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ভাষণে ঘোষণা করেন, মুক্তিপাগল সাড়ে সাত কোটি বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়কে পৃথিবীর কোনো শক্তিই রুখতে পারবে না। যত বাধাই আসুক, বাংলার মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম চলবে।

২১ মার্চ, বরিবার: অসহযোগ আন্দোলন আজকের তারিখে ২০তম দিন। কিন্তু সারা দেশের মানুষের আন্দোলনের জোয়ারে বিন্দুমাত্র ভাটা তো পড়েইনি, জোয়ার বরং উত্তাল হয়ে উঠছিল। সভা-সমাবেশ আর শোভাযাত্রার মাধ্যমে মুক্তিসংগ্রামের কর্মসূচির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রকাশ ২১ মার্চও সমান উৎসাহে ঘটতে থাকে। সরকারি অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ভবনগুলোর শীর্ষে শীর্ষে কালো পতাকা। হাজার হাজার মানুষের অসংখ্য মিছিলে ঢাকা যেন আরও অগ্নিগর্ভ। ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে মুখর নারী-পুরুষ-কিশোরদের সম্মিলিত মিছিল এগিয়ে চলে শহীদ মিনারের দিকে। সেখান থেকে মিছিল যায় ধানমন্ডির দিকে। সারা দিন ধরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবের বাসভবনের সামনে একের পর এক মিছিল আসতে থাকে। কোনো মিছিলকেই বঙ্গবন্ধু উপেক্ষা করেননি। ব্যস্ততার মধ্যেও বারবার এসে মিছিলগুলোকে স্বাগত জানিয়ে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। বক্তৃতাগুলোতে বঙ্গবন্ধু সুস্পষ্টভাবে বলেন, মৌলিক প্রশ্নে কোনো আপস হতে পারে না। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক রক্ত দিয়েছি। প্রয়োজন হলে চরম ত্যাগ স্বীকার করব। তবু দাবি আদায় করে ছাড়ব। জনগণের জয় অবধারিত।’ এই দৃশ্যপটের ভেতর সকালে ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনির্ধারিত বৈঠক হয়। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। বৈঠক শেষে বাসভবনে ফিরে বঙ্গবন্ধু জানান, বৈঠকটি আকস্মিক ছিল না। আগের আলোচনার রেশ ধরে কিছু বিষয় স্পষ্ট করার জন্য এ বৈঠকের প্রয়োজন ছিল। পরামর্শদাতাদের নিয়ে ভুট্টো ঢাকায় আসেন। ভুট্টো বলেন, ‘সমস্যা সমাধানের জন্য ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা হতে হবে।’ স্বাধীন বাংলাদেশ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ ২৩ মার্চ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানি পণ্য বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।’

২২ মার্চ, সোমবার: সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে ২২ মার্চ সকালে প্রেসিডেন্ট ভবনে ইয়াহিয়া খান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁদের ষষ্ঠ বৈঠকে মিলিত হন। এ বৈঠকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টোও যোগ দেন। প্রেসিডেন্টের ভবন এলাকায় ব্যাপক জনসমাবেশ ঘটে। প্রধান ফটকের অদূরে জনতা শেখ মুজিবের সমর্থনে ও ভুট্টোর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ভবনে আসেন বঙ্গবন্ধুর এক ঘণ্টা আগে। ভুট্টো সন্ধ্যায় আবার নিজের উপদেষ্টাদের নিয়ে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টোর বৈঠক চলাকালেই ২৫ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভবনের মুখপাত্রের ঘোষণায় বলা হয়, পাকিস্তানের দুই অংশের নেতাদের মধ্যে আলোচনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্যের পরিবেশ সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য প্রেসিডেন্ট এ অধিবেশন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘জয়বাংলা’ ধ্বনি দিয়ে ঢাকার রাজপথে জনতার মিছিল আর বিক্ষোভ। সকল মিছিলের গন্তব্য বঙ্গবন্ধুর বাসভবন। মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। বন্ধুক-কামান-মেশিনগান কিছুই জনগণের স্বাধীনতা রোধ করতে পারবে না।’ ঢাকার পল্টন ময়দানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রাক্তন বাঙালি সৈনিকদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট ভবনে ইয়াহিয়া-বঙ্গবন্ধু-ভুট্টো’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার কয়েকটি সংবাদপত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত বাংলার স্বাধিকার শিরোনামে ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়।

২৩ মার্চ, মঙ্গলবার: ২৩ মার্চ ছিল ‘পাকিস্তান দিবস’। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিটি বাড়িতে, প্রতিটি যানবাহনে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩২ নং সড়কের বাসভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন এবং আওয়ামীলীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সালাম গ্রহণ করেন। ঢাকস্থ বৃটিশ ডেপুটি হাইকমিশন, সোভিয়েট কনস্যুলেটে সকাল থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। চীন, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, নেপালের হাইকমিশনে/দূতাবাসে তাদের পতাকার সাথে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করলেও জনতার রুদ্ররোষে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা তুলতে বাধ্য হয়। সকালে পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের গণবাহিনীর কুচকাওয়াজ শুরু হয়। দশ প্লাটুন গণবাহিনী সদস্য স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সালাম ও মার্চপাস্ট করে সম্মান জানায়। সম্মিলিত গণবাহিনী ঢাকার রাজপথ ধরে কুচকাওয়াজ করে গার্ড অব অনার প্রদানের জন্য বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে যায়। বঙ্গবন্ধু সমবেত জয়বাংলা/গণবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বাংলার মানুষ কারো করুণার পাত্র নয়। আপন শক্তির দুর্জয় ক্ষমতাবলেই আপনারা স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনবেন।’পাকিস্তান দিবস সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ভবন, ক্যান্টনমেন্ট এবং তেজগাঁ বিমানবন্দর ছাড়া সমগ্র প্রদেশে চাঁদ-তারা পতাকা উত্তোলিত হয়নি। প্রেসিডেন্ট ভবনে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, খন্দকার মোশতাক আহমদ এবং ড. কামাল হোসেন এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার উপদেষ্টা এম এস আহমেদ, বিচারপতি কর্নেলিয়াস, লে. জে. পীরজাদা, কর্নেল হাসান সকাল ও বিকালে বৈঠকে মিলিত হন।
২৪ মার্চ, বুধবার: আওয়ামীলীগ ও ইয়াহিয়া খানের পরামর্শদাতাদের সঙ্গে সকাল ও সন্ধ্যায় দুই দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ দিনও বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে বিক্ষুদ্ধ মানুষের মিছিলের স্রোত। জনগণের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার মাথা কেনার শক্তি কারও নেই। বাংলার মানুষের সাথে, শহীদের রক্তের সাথে আমি বেঈমানী করতে পারবো না। আমি কঠোরতম সংগ্রামের নির্দেশ দেয়ার জন্য বেঁচে থাকবো কি না জানি না। দাবি আদায়ের জন্য আপনারা সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন।’ চট্টগ্রামে সোয়াত জাহাজ হতে অস্ত্র নামানো নিয়ে হাজার হাজার বাঙ্গালি ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। বাঙালি সৈনিকরা জনতার সাথে একাত্ন হয়ে প্রতিরোধের দুর্জয় প্রাচীর গড়ে তোলে। ইয়াহিয়া-বঙ্গবন্ধুর বৈঠক বাতিল হয়ে যায়।

২৫ মার্চ, বৃহস্পতিবার: বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সারা বাংলায় অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। সরকারি অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। সরকারি-বেসরকারি অফিসে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিক্ষুব্ধ মিছিলকারীরা মিছিলসহ বঙ্গবন্ধুর বাসবভনে গিয়ে নেতার প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “বিশে^র কোন শক্তিই পূর্ববাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ন্যায়সঙ্গত এবং আইনসঙ্গত দাবিকে নস্যাৎ করতে পারবে না। জনতার দাবিকে ‘শক্তির দাপটে’ দাবিয়ে রাখার জন্য যদি কেউ ‘রক্তচক্ষু’ প্রদর্শন করে আমরা তা বরদাশত করব না এবং তা নিশ্চিহ্ন করে দেব।” প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও বঙ্গবন্ধুর উপদেষ্টাদের গতকালের বৈঠকে ও আওয়ামীলীগের স্বায়ত্তশাসন সম্পর্কে ভুট্টো বলেন, ‘আমরা কোন অসুবিধা সৃষ্টি করছি না। আওয়ামীলীগ যে ধরনের স্বায়ত্তশাসন চাচ্ছে তাকে আর প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন বলা চলে না। ওদের দাবি তো স্বায়ত্তশাসনের চেয়েও বেশি-প্রায় সার্বভৌত্বের কাছাকাছি।’ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বিকালে প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সেনানিবাসে যান এবং রাত ৮টায় করাচির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত ৯টায় বঙ্গবন্ধু তাঁর বাসভবনে দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছেন। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট অখন্ড পাকিস্তানের সমাপ্তি টানলেন।’ বঙ্গবন্ধু আরো বলেন, ‘ আমাকে হয়তো ওরা হত্যা করতে পারে। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, আমার সমাধির উপর একদিন স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করবেই।’ রাত ১১ টায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাত সাড়ে এগারোটায় সেনা ছাউনি থেকে বেরিয়ে আসে। ফার্মগেইটে সেনাবাহিনী প্রথম জনতার প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়। ছাত্র-জনতা সেনাবাহিনীকে বাধা দিলে তারা মেশিনগন ব্যবহার করে, ডিনামইট দিয়ে ব্যারিকেড উড়িয়ে দেয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকার রাজপথে এবং ঘুমন্ত বাঙালিদের উপর অস্ত্র হাতে ঝাপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের শিক্ষকদের বাড়িতে আক্রমণ করে। ঢাকা বিশ^দ্যিালয়ের অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, ড. ফজলুর রহমান, ড. জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, ড. মনিরুজ্জামান, মুহাম্মদ আবদুল মোকতাদির, শরাফত আলী, মোহাম্মদ সাদেক, সাদত আলী, আনিসুর রহামনকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করে। পাকিস্তানি বাহিনীর নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ২৫ মার্চ রাত্রের শেষ প্রহরে (২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে) বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন।

২৬ মার্চ, শুক্রবার: বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ‘‘This may be Last message-from todat Bangladesh is Independent. I call upon the people of Bangladesh, wherever you are with whatever you have to resist the army of occupation to the last. You fight must go on until the last soldier of the Pakisttan occupation army is expelled from the Soil of Bangladesh and final victory is achieved.”

‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অতর্কিতে পিলখানার ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছ এবং শহরের লোকদের হত্যা করছে। ঢাকা, চট্টগ্রামের রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশে^র জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গলরেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোন আপোস নাই, জয় আমাদের হবেই। আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামীলীগ নেতা এবং অনান্য দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতাপ্রিয় লোকদের এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আমাদের মঙ্গল করুন। জয়বাংলা। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী রাত দেড়টার দিকে সকল প্রতিরোধ বুহ্য ভেঙ্গে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে আসে। সেনারা বাসভবনে এলাপাতাড়ি গুলি বর্ষণ শেষে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। বঙ্গবন্ধুকে বন্দী করে শেরে বাংলা নগরস্থ সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকাসহ সারাদেশে পাক হানাদার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ আরম্ভ করলে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বাঙালী সেনাবাহিনী, ইপিআর, পুলিশসহ ছাত্র জনতা পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরম্ভ করেন। একই সময়ে চট্টগ্রামের কালুর ঘাটে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা হয়। চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। সকালে ঢাকা সেনানিবাসের অভ্যন্তরের আদমজী স্কুল থেকে বন্দী অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে ফ্ল্যাগ হাউজে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আটটায় ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তান সরকারের ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সেনাবাহিনীকে আদেশ দেওয়া হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহামন অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজ করেছেন। .....আইন অমান্য করে একটি সমান্তরাল সরকার গঠনের প্রয়াস চালিয়েছেন। ... লোকটি (শেখ মুজিব) এবং তার দল পাকিস্তানের শত্রু। তারা পূর্ব পাকিস্তানকে একবোরেই বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে চান। শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সংহতি ও সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হেনেছেন। এ অপরাধের জন্য তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’ (সমাপ্ত)

লেখক: ড. মুহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী, সহযোগী অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ, নরসিংদী।

রেফারেন্স:
. রেহমান সোহবান, বাংলাদেশের অভ্যুদয় একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ১৯৯৮, পৃ. ১৫।
. দি মর্নিং নিউজ, ৩মার্চ ১৯৭০।
. ড. মোহাম্মদ হাননান, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, ১৮৩০ থেকে ১৯৭১, পৃ. ৬০২।
. ড. মোহাম্মদ হাননান, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, ১৮৩০ থেকে ১৯৭১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৫ ও সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১ মার্চ, ২০২১, পৃপৃ. ১-২।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২ মার্চ, ২০২১, পৃপৃ. ১-২।
. ড. কামাল হোসেন, স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা ১৯৬৬-১৯৭১, অঙ্কুর প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৪, পৃ. ৫৩।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২ মার্চ, ২০২১, পৃপৃ. ১-২।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২ মার্চ, ২০২১, পৃপৃ. ১-২।
. ড. কামাল হোসেন, স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা ১৯৬৬-১৯৭১, অঙ্কুর প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৪, পৃ. ৫৪, ও
ড. কামাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ কেন অনিবার্য ছিল, প্রথমা, ঢাকা, ২০১৮, পৃপৃ. ৭০-৭১।
. ড. কামাল হোসেন, স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা ১৯৬৬-১৯৭১, অঙ্কুর প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৪, পৃ. ৮১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৬।
. ড. কামাল হোসেন, স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা ১৯৬৬-১৯৭১, (পরিশিষ্ট ঙ) অঙ্কুর প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৪, পৃপৃ. ৮২-৮৩।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৩ মার্চ, ২০২১, পৃপৃ. ১-২।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৪ মার্চ, ২০২১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৬।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৪ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৪ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. সংবাদ, ৬ মার্চ ১৯৭১।
. দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ মার্চ ১৯৭১ ও রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৫ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৬ মার্চ, ২০২১।
. দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ মার্চ ১৯৭১ ।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃপৃ. ৩৬-৩৭ ও
সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৭।
. ড.আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশের ইতিহাস ১৯০৫-১৯৭১, ঢাকা, পৃ. ৪১৬, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৭ ও সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৭ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৮ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৯ মার্চ, ২০২১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৮।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ৯ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১০ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১০ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১১ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১২ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৩ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৩ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৩ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৪ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৪ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৫ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৬ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৯।
. দৈনিক পূর্বদেশ, ১৬ মার্চ ১৯৭১।
. দৈনিক পূর্বদেশ, ১৬ মার্চ ১৯৭১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৩৯ ও সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৭ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৮ মার্চ, ২০২১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ১৯ মার্চ, ২০২১।
.মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪০ ও সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. মঈনুল হোসেন চৌধুরী, প্রথম আলো, ২৩ মার্চ ২০০৮, পৃ.১০।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২০ মার্চ, ২০২১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪০।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪০।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২০ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২০ মার্চ, ২০২১।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২১ মার্চ, ২০২১।
.মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪০।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা।
. রাশেদুর রহমান, প্রথম আলো, ২২ মার্চ, ২০২১।
.সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা ও মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪০।
.সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা ও মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃপৃ. ৪০-৪১ ও
ড. কামাল হোসেন, স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা ১৯৬৬-১৯৭১, অঙ্কুর প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৪, পৃপৃ. ৭০-৭১।
.সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭, ঢাকা ও মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪১।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭।
. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের তারিখ, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০১, পৃ. ৪১।
. ড.মোঃ অবদুল ওদুদ ভূইয়া, বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন,
. হাসান হাফিজুর রহমান (সম্পাদিত), বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ: দলিলপত্র, ৩য় খন্ড, তথ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা, ১৯৮২, পৃ. ১।
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭।
. বেলাল মোহাম্মদ; স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক, প্রথম আলো, ১৮/০৭/২০০০
. সাপ্তাহিক বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা ৯৭।


বিভাগ : মতামত


এই বিভাগের আরও