শিবপুরের “এমপি মুক্তিযোদ্ধা নন” উপজেলা চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ

২৯ আগস্ট ২০১৯, ০৪:০৯ পিএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ এএম


শিবপুরের “এমপি মুক্তিযোদ্ধা নন” উপজেলা চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের সাংসদ জহিরুল হক ভুইয়া মোহন মুক্তিযোদ্ধা নন, শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানের এমন মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ ও মুক্তিযোদ্ধারা।
গত ২৭ আগস্ট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন খানের এমন বক্তব্যের বরাতে জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সাংসদের শিবপুরস্থ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আজিজুর রহমান খান বুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ খান নিজেই মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুন অর রশিদ খান স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ২৭ ডিসেম্বর শরনার্থী হিসেবে ভারত থেকে দেশে ফিরেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেননি, যে কারণে তার নাম মুক্তিযুদ্ধের লাল বইয়েও নেই। তার নামে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ইস্যুকৃত কোন সনদও নেই।
হারুন খান অনলাইনে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের সময় মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন মাত্র। অথচ তিনি অবৈধভাবে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটিতেও ছিলেন। যিনি মুক্তিযোদ্ধাই নন এবং মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তিনি কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটিতে থাকেন?
উপরন্তু হারুন খান একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সাংসদ মোহনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা মন্তব্য করে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যার মুক্তিযুদ্ধের সাথে কোন সম্পৃক্ততা ছিল না তিনি কিভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে এরকম মন্তব্য করেন? এমন বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এসময় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, জাতীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন ভারত থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত বিএলএফ এর থানা কমান্ডার আব্দুল বাতেন বিএসসি এবং ডেপুটি কমান্ডার আবদুল হাই মাস্টার এর তত্ত্বাবধানে উত্তর সাধারচর ট্রেনিং ক্যাম্পে ১৯৭১ সালের আগষ্ট মাসে যুদ্ধেও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। যার ফলশ্রুতিতে মোহনের নাম মুক্তিবার্তা লাল বই এ অর্ন্তভুক্ত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক যাচাই পূর্বক মুক্তিযোদ্ধা সনদপ্রাপ্ত হন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে একটি গেজেট প্রকাশিত হয় যা “মুক্তিযোদ্বা গেজেট” হিসেবে পরিচিত, সেই গেজেটেও সাংসদ জহিরুল হক মোহন এর নাম অর্ন্তভুক্ত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েও হারুন অর রশিদ খান বিগত প্রায় সবকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের বিরোধীতা করে আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছেন। এ কারণে একবার তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। তার অব্যাহত এসব ষড়যন্ত্র সফল হবে না বলে হুশিয়ারী দেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
এছাড়া হারুন অর রশিদ খান নিয়ম বহির্ভূতভাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে যখন যাকে খুশি রাখেন আবার বাদ দেন বলেও অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধকালীন থানা কমান্ডার আব্দুল বাতেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মাছিমপুর ইউনিয়ন পরিষের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফারহাদ আলম ভূঞা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাই মাষ্টার, আলমগীর হোসেন মৃধা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোঃ মোতালেব খান, সহকারী কমান্ডার বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী, দপ্তর সম্পাদক মাসুদ পারভেজসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

 



এই বিভাগের আরও