পলাশে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন

২৬ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৩৯ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২১ এএম


পলাশে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় পবিত্র রমযান মাসেও বেড়েছে লোডশেডিং। তীব্র লোড শেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনে ও রাতের বেশীর ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় থমকে যাচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম। ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে তীব্র লোডশেডিং-এর কারণে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। ইফতার, সাহরি ও তারাবির নামাজের সময়েও অনেক এলাকায় দেখা দিচ্ছে লোডশেডিং।

তবে ঘোড়াশাল পল্লী বিদ্যুৎ আঞ্চলিক অফিস বলছে, পলাশ তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের গ্রীড থেকে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগ দিন ও রাতের বেশীরভাগ সময় পাওয়া যায় না বিদ্যুৎ। টানা কয়েকদিনের লোডশেডিং-এর কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর, দোকান, মার্কেট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকাসহ অপর ৪টি ইউনিয়নে একই চিত্র পল্লীবিদ্যুতের। কয়েকদিন পরই পবিত্র ঈদ উল ফিতর। ঈদ উপলক্ষ্যে কাপড় ব্যবসায়ী ও দর্জি প্রতিষ্ঠান গুলোতে ক্রেতাদের ভীড় বাড়লেও বিদ্যুতের সংকটে তা অচল হয়ে পড়েছে। ফলে প্রচন্ড গরমে ক্রেতারা আসছেন না মার্কেটগুলোতে।

একই কারণে উপজেলার বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা- কর্মচারী, ফটোকপি-কম্পিউটারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে ২-৩ ঘন্টার আগে ফিরে আসছে না। ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং এর কবলে উপজেলার প্রায় ৪৫ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

ঘোড়াশাল বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মুন্না, সিরাজুল, বাবুল সহ একাধিক গ্রাহক জানান, সামনে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। কিন্তু ঘন ঘন বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য করা মুশকিল হয়ে উঠছে।

পলাশ নতুনবাজার এলাকায় বসবাসরত আল আমিন জানান, ঘন ঘন লোডশেডিং-এর কারণে ছেলে-মেয়েরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। অভিযোগ জানানোর জন্য বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের যেসব নাম্বার দেয়া আছে এগুলোও বন্ধ থাকে, খোলা থাকলেও কল দিলে রিসিভ করে না।

পলাশ বালুচর পাড়ার মুনসুর মিয়া ও পলাশের গজারিয়ার সাধুর বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, আমাদের এলাকায় আগে কখনো বিদ্যুতের এমন লোড শেডিং হয়নি। ইদানিং দিনে রাতে প্রায় ৪/৫ ঘন্টার অধিক সময় বিদ্যুৎ থাকে না।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নরসিংদী-১ ঘোড়াশাল আঞ্চলিক অফিসের ডিজিএম মোঃ আকবর হোসেন জানান, শতভাগ বিদ্যুতায়নে পলাশ উপজেলায় ১১৮টি গ্রামের মোট ৪৫ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অধিক লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের গ্রাহকের বিদ্যুৎ চাহিদার তুলনায় ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের গ্রীড থেকে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি। আগে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার থেকে ৬৩ মেগাওয়াট করে ১২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যেতো। কিন্তু গত কিছুদিন পূর্বে ৬৩ মেগাওয়াটের একটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়। তাই অর্ধেক বিদ্যুৎ দিয়ে কোনমতে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে কাজ চালাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, নতুন আরেকটি ৭৫ মেগাওয়াটের পাওয়ার ট্রান্সফরমার বসানোর ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গেছে, তা পেতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগতে পারে। ঈদের ছুটির সময় সরকারি-বেসরকারি অফিস, কলকারখানা ও বিভিন্ন স্থাপনা বন্ধ থাকায় নতুন ট্রান্সফরমার না পেলেও লোডশেডিং থাকবে না। আর আমরা যদি দ্রুত সময়ে নতুন ট্রান্সফরমার পাই তাহলে বিদ্যুৎ সরবরাহ আবার ঠিক হয়ে যাবে।