নরসিংদীতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণীর বিয়ে দিলেন জেলা প্রশাসক

০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:১০ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম


নরসিংদীতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণীর বিয়ে দিলেন জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে সুন্দর করে সাজানো হয় নরসিংদীর সার্কিট হাউজ। সেই সাথে ভালো খাবারের আয়োজন। সার্কিট হাউজের হলরুমে সেজেগুজে এসেছেন শতাধিক অতিথি। হলরুম জুড়ে মৃদুস্বরে বাজছে সানাই। এতসব আয়োজন করা হয়েছিল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উচ্ছ্বল তরুণী জুয়েনার বিবাহোত্তর উষ্ণ সংবর্ধনাকে ঘিরে।

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের সহযোগিতায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণী জুয়েনা ও মনিরের বিবাহোত্তর উষ্ণ সংবর্ধনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত থেকে নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানান, জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন ও তার স্বামী পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মো. সায়েদুর রহমান।

নরসিংদীর সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষার্থী জুয়েনা বেগম (১৮) মধ্যম প্রকৃতির বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। সে নরসিংদী শহরের ভেলানগরের আসাদ মিয়ার মেয়ে। অন্যদিকে জুয়েনার স্বামী মনির হোসেন (২৩) রায়পুরার মরজালের মো. ফরিদ মিয়ার ছেলে, পেশায় স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কের টেকনিশিয়ান।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের সভাপতি হিসেবে বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে উচ্ছ্বল বুদ্ধি প্রতিবন্ধী জুয়েনাকে চোখে পড়ে জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনের। তারপর থেকে তিনি সবসময় জুয়েনার খোঁজখবর নিতেন। তার পরিবারকে একটি ভালো, দায়িত্বশীল এবং কর্মঠ ছেলে খোঁজ করতে বলেন। মনিরের খোঁজ পাওয়ার পর প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বহুবার আলোচনা করিয়েছেন। এরপর গত মাসের ২৫ তারিখ শহরের ভেলানগরে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। জুয়েনা ও মনিরের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে তদারকি করেন জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন।

এছাড়াও আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমল কুমার ঘোষ, সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ এম জামেরী হাসান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ আলম মিয়া, সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন সরকারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং নবদম্পতির পরিবারের সদস্যরা।

বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক তার প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রাপ্তির ২৫ হাজার টাকা নববধূ জুয়েনার হাতে তুলে দেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ্য থেকে ৭০ হাজার ও সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের পক্ষ্য থেকে ৩০ হাজার টাকা নবদম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত সকলের স্নেহভরা ভালবাসায় সিক্ত হন মনির ও জুয়েনা। তাদেরকে শুভেচ্ছা জানান অতিথিরা এবং সবসময় তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন সরকার জানান, সবসময় প্রাণোচ্ছ্বল আমাদের শিক্ষার্থী এই জুয়েনার শুধুমাত্র বুদ্ধিতেই সমস্যা। জুয়েনার সমস্যা জেনেই ছেলেপক্ষ তাকে মেনে নিয়েছে। তারা এখন ভালোভাবে সংসার করতে পারলেই আমরা খুশি।