এবারও এনকেএম হাইস্কুল এন্ড হোমসের চমক, জিপিএ-৫,  ৯৯.৬৬%

১২ মে ২০২৪, ০৪:২২ পিএম | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৯ এএম


এবারও এনকেএম হাইস্কুল এন্ড হোমসের চমক, জিপিএ-৫,  ৯৯.৬৬%

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এসএসসির ফলাফলে এবছরও সাফল্য ধরে রেখেছে নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা (এনকেএম) হাইস্কুল এন্ড হোমস। এবছর বিদ্যালয়টির ২৯৫ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৯৪ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। রোববার (১২ মে) বেলা ১১ টায় অনলাইনে এসএসসির ফলাফল ঘোষণার পর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন।

প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদির মোল্লা ও মিসেস নাছিমা মোল্লা। এর আগে ২০২৩ সালে শতভাগ পাসসহ ৯৭.১২ শতাংশ জিপিএ ৫ ও ২০২২, ২০১৭ এবং ২০১৫ সালে শতভাগ পাসসহ শতভাগ জিপিএ-৫ পেয়ে দেশ সেরা ফলাফল অর্জন করেছিল এই প্রতিষ্ঠানটি।

বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমস ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে টানা শতভাগ পাসসহ ফলাফলের ভিত্তিতে প্রায় প্রতিবছরই বোর্ডে দেশ সেরার  স্থান দখল করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২৯৫ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৯৪ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে। বাকি একজন শিক্ষার্থী জিপিএ ৪.৯৪ পেয়েছে।

বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পাওয়া কারিমা জামান রিনভী জানায়, ‘আমি স্কুলের হোষ্টেলে থাকি নাই। কিন্তু কখনো মনে হয়নি আমি বাসায় রয়েছি। সর্বদা বিদ্যালয়ের শিক্ষক, গাইড শিক্ষকসহ সবাই তদারকির মধ্যে রেখেছেন। আমার মা ও বাবা অনেক কষ্ট করেছেন।

জিপিএ ৫ পাওয়া সাদিয়া নওরীন প্রভা জানায়, এই ফলাফলের জন্য আমাদের বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, সঠিক দিক-নির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, গাইড টিচারের মাধ্যমে নিয়মিত হোম ভিজিট, টিউটেরিয়াল ও মাসিক পরিক্ষার কারণেই এই ভাল ফলাফল সম্ভব হয়েছে।’

জিপিএ ৫ পাওয়া আবিদ নূর জানায়, স্যারদের কঠোর নজরদারিতে কোন কোন ক্ষেত্রে মনে হয়েছে আমার নয়  শিক্ষকদের পরীক্ষা। প্রতিটা বিষয়ে যেখানে সমস্যা সেখানেই হাতেকলমে ধরে দিয়েছেন তারা। স্যারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই দেশসেরা ফলাফল করছে। এবারও প্রায় শতভাগ পাসসহ দেশ সেরা ফলাফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। সারাদেশের সার্বিক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে আশা করছি আমরা দেশসেরা অবস্থানে আছি। মূলত নরসিংদীর মত মফস্বল শহরে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়েই আমি ও আমার সহধর্মীনী নাসিমা বেগম স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমি সবসময় চেয়েছি সুশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানব সম্পদে পরিনত হউক। যাতে আমাদের সমাজে সার্টিফিকেটধারি শিক্ষিত বেকার তৈরী না হয়।

তিনি আরও বলেন, আজকের এই সাফল্য শুধু এই প্রতিষ্ঠানের একার না। এই সাফল্য পুরো নরসিংদীবাসীর। এরই লক্ষ্যে আমার পরিচালনাধীন মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশন শুধু আমাদের পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, জেলার প্রায় ৩১৫ টি স্কুল ও কলেজে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করনে সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন বলেন, ‘একটি বিদ্যালয়ের ভাল ফলাফলের মূল মন্ত্র হচ্ছে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবদের মধ্যে সমন্বয়। আর আমাদের মূলমন্ত্র হচ্ছে আবদুল কাদির মোল্লা। স্যারের ইনোভেটিভ চিন্তা-চেতনা, সময়োপযোগী সঠিক দিক নির্দেশনায় আমরা এক ঝাঁক তরুণ শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমাদের এই ফলাফল অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, নরসিংদীতে মানসম্মত শিক্ষা দানের অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৮ সালে শহরের ভেলানগর এলাকায় থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা নরসিংদীতে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী মিসেস নাসিমা বেগমের নামে যৌথভাবে নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমস প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ১৭৩ জন তরুণ ও মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষিকার সার্বিক তত্ত্বাবধানে স্কুলটি কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে স্কুলটির শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫  হাজার ৬০০ জন।

এর আগে ২০২৩ সালে ২৭৮ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৭০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ২৬৬ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৬৬ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছিল। এছাড়া ২০২১ সালে ২৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০২০ সালে ২১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২০০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০১৯ সালে সালে ১৭১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৬৮ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০১৮ সালে ১৩৯  জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ  ১৩৭  জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল এবং ২০১৭ সালের এসএসসি পরিক্ষায় ১৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।



এই বিভাগের আরও