বেলাবতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে ফ্যাক্টরি নির্মাণ: পানির নীচে ঘরবাড়িসহ শত বিঘা ফসলী জমি

১২ আগস্ট ২০২০, ০৪:৪৭ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৩ এএম


বেলাবতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে ফ্যাক্টরি নির্মাণ: পানির নীচে ঘরবাড়িসহ শত বিঘা ফসলী জমি
এভাবেই পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে কৃষকের ফসল।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে ফ্যাক্টরি নির্মাণ করায় বৃষ্টির পানি ও ফ্যাক্টরির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার অর্ধশতাধিক ঘর বাড়িসহ প্রায় শত বিঘা ফসলী জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি, রায়পুরা উপজেলার ভিটি মরজাল, চর ধুকুন্দিসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত কৃষকের আবাদ করা কাকরল, মরিচ, ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে এ এলাকার শতাধিক চাষীদের। অন্যদিকে এসব এলাকার ঘর বাড়িতে পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা।

জানা যায়, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার মধ্যবর্তী ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে ধুকুন্দি চারাবাগ নামক স্থানে ২০১৮ সালে ফসলি জমির উপর নির্মাণ করা হয় আরমান ফিড এন্ড ফিসারিজ (পুষ্টিরাজ) নামে একটি ফিড মিল। এই ফিড মিলটি স্থাপন করার শুরুতেই মিল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয় ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ড্রেইন। যার কারনে সামান্য বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির পানি ও ফ্যাক্টরির দূষিত পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। তলিয়ে যায় সবজি অধ্যুষিত এ এলাকার চাষীদের শত শত বিঘা জমির ফসল ও ঘর বাড়ি।

এলাকাবাসিদের অভিযোগ এ সমস্যা নিরসনের জন্য ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও সুরাহা মিলেনি। ফলে মিল নির্মাণের পর থেকেই চরম দূর্ভোগে দিন অতিবাহিত করছে এ এলাকার বাসিন্দারা।

ধুকুন্দি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বাচ্চু, ইয়াসিন মিয়া জানান, ফিড মিলের কারণে আমাদের প্রায় ৬ বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে জমিতে লাগানো মরিচ, কাকরল, ঢ়েঁড়শসহ অন্যান্য ফসল পচে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে।

কৃষক সোহাগ মিয়া জানান, ফিড মিলটি স্থাপনের পর থেকেই আমরা এসব জমি হতে ফসল তুলতে পারিনা। সামান্য বৃষ্টি ও ফ্যাক্টরির দূষিত পানি জমে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। আমরা বারবার মিল কর্তৃপক্ষের কাছে বলার পরও তারা আমাদের কথায় কোন কর্ণপাত করেনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ জহিরুল ইসলাম জগত বলেন, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করেই ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। যার কারণে জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়ে আমার এলাকার প্রায় এক থেকে দেড়শ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি রাখছি যাতে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়ে এ এলাকার কৃষকদের রক্ষা করেন।

ফিড মিলটির ম্যানেজার মোহাম্ম্দ মহিউদ্দীন জানান, আমাদের মিলটি বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে। রায়পুরা উপজেলার ভিটি মরজাল ও চরধুকুন্দি গ্রামের মানুষেরা বলছে ড্রেইন দিয়ে কোম্পানির বর্জ্য মিশ্রিত পানি বের হয়ে তাদের ফসলী জমি ও ঘরবাড়ি বিনষ্ট করে। এ অজুহাতে তারা পানি নিষ্কাশনের ড্রেইনের মুখ বন্ধ করে দেয়। ড্রেইন বন্ধ করে দেয়ার কারণে বৃষ্টির পানি জমে বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের কিছু ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে।

বেলাব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নাজিম উর রউফ খাঁন বলেন, কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি ঐ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিবো।



এই বিভাগের আরও