বেলাবতে স্বামী পরিবার কর্তৃক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

২৫ আগস্ট ২০১৯, ০৬:৫৪ পিএম | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৭ পিএম


বেলাবতে স্বামী পরিবার কর্তৃক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

বেলাব প্রতিনিধি ॥
নরসিংদীর বেলাবতে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর পরিবারের সদস্যদের কর্তৃক সালমা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২৫ আগস্ট) উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের হাড়িসাংগান গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

ঘটনার পর নিহত গৃহবধূর স্বামীসহ তার বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। বেলাব থানা পুলিশ ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী মর্গে প্রেরণ করেছে। 
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে বেলাব থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুদ্দিন ভূঁইয়া। 

পুলিশ ও নিহত গৃহবধুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের রাজারামপুর গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তারকে বিয়ে করেন একই উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের হাড়িসাংগান পূর্বপাঁড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে কাঞ্চন মিয়া। বিয়ের পর থেকেই স্বামী, শশুর শাশুড়ি ও ননদ গৃহবধূ সালমাকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারধর করতো। নিপা আক্তার নামে সালমার ১০ বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। ঈদের পর মেয়ে নিপাকে নিয়ে সালমা ঢাকায় তার স্বামীর কর্মস্থলে চলে যায়। 
চারদিন আগে গৃহবধূ সালমার শশুর সিরাজ মিয়া ঢাকা থেকে তার নাতী নিপাকে নিয়ে আসেন। নিপার জন্মের ছয় মাস পর থেকেই শশুর শাশুড়ি ও ননদ নিপাকে তার মা সালমার সাথে রাতে ঘুমাতে দিতেন না। এসব ঘটনা নিয়ে ৩/৪ দিন আগে স্বামী কাঞ্চন মিয়ার সাথে স্ত্রী সালমার কথা কাটাকাটি হয়। এসময় স্বামী কাঞ্চন মিয়া স্ত্রী সালমাকে মারধর করে মাথা ফাঁটিয়ে দেয়। 
এ ঘটনার পর গত ২৩ আগষ্ট শুক্রবার স্বামীর সাথে রাগ করে সালমা ঢাকা থেকে তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। শনিবার দিন শশুর বাড়ির লোকজন মেয়ে নিপাকে সালমার সাথে রাখার প্রতিশ্রুতি দিলে সালমা তার স্বামীর বাড়িতে যায়। রাতে এ নিয়ে স্বামী কাঞ্চন মিয়া সহ শশুর শাশুড়ি ও ননদ এর সাথে পূণরায় ঝগড়া হয়। এসময় শশুর বাড়ির লোকজন পূণরায় সালমাকে মারপিট করলে তার মৃত্যু হয়। পরে বাড়ির পাশের একটি কাঠাল গাছে তার লাশ ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করার চেষ্টা করে। 

নিহত গৃহবধূর পিতা মোঃ তারা মিয়া বলেন, আমার মেয়েকে তারা প্রায়ই নানা বিষয় নিয়ে মারধর করতো। কিন্তু তারা যে, আমার মেয়েকে একেবারে মেরে ফেলবে এটা কখনো ভাবিনি। আমি ঘাতক জামাই কাঞ্চন, শশুর সিরাজ মিয়া, শাশুড়ি ও ননদীকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি এই হত্যাকা-ের বিচার চাই। 

বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ফখরুউদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এটি হত্যাকা-। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিহত গৃহবধুর বাবা তারা মিয়া বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই নিহত গৃহবধূর শশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।



এই বিভাগের আরও