নরসিংদীতে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় কাজে ফিরছেন ৩ শত কারখানার ২০ হাজার শ্রমিক

১৮ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৬ পিএম | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ পিএম


নরসিংদীতে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় কাজে ফিরছেন ৩ শত কারখানার ২০ হাজার শ্রমিক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীতে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় কাজে ফিরছেন কর্মবিরতিতে থাকা ৩ শত কারখানার ২০ হাজার শ্রমিক। রোববার চৌয়ালা শিল্প এলাকায় সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় টেক্সটাইল শিল্প মালিক সমিতি ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের মধ্যকার এক মতবিনিময় সভায় এ মধ্যস্থতা হয়। সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে ক্যাপ্টেন মো: রকিবুল আলম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

এর আগে চৌয়ালা শিল্প এলাকার ইয়ামিন টেক্সটাইল এর শ্রমিক রুবেল মিয়া (১৮) এর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় কর্মবিরতিতে গিয়ে আন্দোলন করছিলেন বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নরসিংদীর চৌয়ালা শিল্প এলাকায় টেক্সটাইল শিল্প মালিক সমিতি ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়। সভায়  নরসিংদীতে মোতায়নরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৮ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের  ক্যাপ্টেন রকিবুল আলম,  নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাজ্জাদ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পক্ষ থেকে মোঃ মাহফুজ অংশগ্রহণ করেন। এসময় টেক্সটাইল শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ শিল্প মালিক সমিতির অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।   

মত বিনিময় সভার শুরুতেই শ্রমিকদের পক্ষ থেকে একজন তাদের দাবি-দাওয়া উত্থাপন করেন। এসব দাবির মধ্যে ছিল পলাতক আসামি হোসেন আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, প্রতিটি কারখানায় অটো সার্কিট ব্রেকার স্থাপন, দুর্ঘটনায় আহত হলে চিকিৎসার সুব্যবস্থা, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের উপর অহেতুক নির্যাতন, মামলা বা হয়রানি না করা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য একটি ক্লিনিক ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা, শুক্রবার সকাল ০৮টা  থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখা এবং নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা।

পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় উত্থাপিত দাবিসমূহ  মালিক সমিতি ও উপস্থিত শ্রমিকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়। উপস্থিত শ্রমিক জনতা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন এবং  রোববার বিকাল ৫টা হতে তাদের নিজ কর্মস্থলে যোগদান করে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। 

 

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে চৌয়ালায় ইয়ামিন টেক্সটাইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় এক শ্রমিক। প্রতিবাদে পরদিন বুধবার বিকেলে টেক্সটাইলগুলো বন্ধ রাখার জন্য বিভিন্ন টেক্সটাইলে যায় বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা। শালিধা এলাকার হোসেন আলীর টেক্সটাইল কারখানায় গিয়ে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কারখানা বন্ধ করতে চাইলে ওই কারখানার শ্রমিকদের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে রুবেল মিয়া (১৮) নামের এক শ্রমিক সহ আরও এক শ্রমিক নিখোঁজ ছিলেন।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শালিধায় অবস্থিত হোসেন আলীর কারখানার বেশ কিছু দূরের একটি ডোবা থেকে শ্রমিক রুবেল এর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হোসেন আলীর ২টি টেক্সটাইল, ২টি গোডাউন ও ৫তলা একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সেনা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে সেনাবাহিনী। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

কয়েকজন শ্রমিক জানিয়েছিলেন, হোসেন আলীর কারখানার শ্রমিকদের সাথে মারামারির পর থেকে রুবেল নিখোঁজ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে তার কারখানার শ্রমিকরা তাকে মেরে ডোবায় ফেলে রেখেছে। তাই বিক্ষুব্ধ শ্রমিক হোসেন আলীর বাড়ি ও কারাখানায় আগুন দেয়।

 

 

 



এই বিভাগের আরও