ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে : জয়পুর,ইন্ডিয়া।
২০ জুলাই ২০১৯, ১০:৪৮ এএম | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫০ পিএম
আমার যত ঘুরাঘুরি : জয়পুর,ইন্ডিয়া।
প্রকৃতির মতোই ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখতেও আমার খুবই ভালো লাগে। আমি ইতিহাস হাতড়ে হাতড়ে চলে যাই সে-ই সময়ে। আমি কল্পনা করি সেই সময়কার জীবন যাপনের।
ফতেহপুর সিক্রি দেখা শেষ করে আমরা চলে গেলাম রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর। 'পরদেশী পরদেশি জানা নেহি '। দীর্ঘ পথ। যেতে যেতে রাত নয় মাঝরাত হয়ে গেল। চারদিকে শুনশান নীরবতা। এত বেশী নীরব ছিল যে আমি ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। আমার কেবলই মনে হচ্ছিল এখন যদি আল্লাহ না করুন কোন দূর্ঘটনায় পড়ি কিংবা ডাকাতে ধরে কি করবো আমরা।
মাঝে মাঝে দুটো একটা মালবাহী লড়ি আসলে আমি অনেক আনন্দিত হতাম। আনন্দিত হতাম এ কারণে যে অন্ততঃ রাতের নীরবতা তো কাটতো! আর ভয় পাচ্ছিলাম ড্রাইভার যদি আবার ঘুমিয়ে পরে। বেটা সারাদিন গাড়ী চালিয়ে এখন এত রাত পর্যন্ত চলছে। তার এসিস্ট্যান্ট আর সে মাঝে মাঝেই তাদের ভাষায় তাদের ঠাকুরের নাম ঝপ করছে।
পুরা ভারতেই আমি একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম -গাড়ীতে তারা লেবু পেয়াজ রসুন মরিচ বেগুন কড়লাসহ বিভিন্ন সবজি মালার মতো করে ঝুলিয়ে রাখে আর সকালবেলা শুরুতেই ধর্মীয়-হনুমান সংগীত বাজাতে থাকে গাড়িতে। আমি যতই বলি তোমরা এসব হরিনাম বন্ধ কর এরা শুধুই হাসে আর বলে এটাই তাদের নিয়ম। তাদের দেবতাকে তুস্ট করে এসব সবজি আর সংগীত দিয়ে।
অবশেষে আমরা যখন জয়পুরে নির্ধারিত হোটেল ঈশ্বর প্যালেস এ গেলাম তখন রাস্তায় দু একটা কুকুরের ডাক ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। আমরা ছিলাম জয়পুর পিংকসিটিতে।ঈশ্বর প্যালেস হোটেল বেশ সুন্দর । পিংক সিটির বাড়ীঘর দালান কোঠা সবকিছুই পিংক কালারের। মানুষ খুবই ভদ্র। জন বসতি কম। গাড়ী রাখার জন্য তাদের কোনও গ্যারেজ লাগেনা। গাড়ী রাস্তায় পার্ক করে। আমার মনে হচ্ছিল সেখানে চুরি করার কেউ নেই। বাংলাদেশের মতো একটি দেশ থেকে গিয়ে আমরা সব অবাক হয়ে দেখছিলাম যেখানে চোখের সামনেই গাড়ির পার্টসগুলো খুলে নিয়ে যায়।যাই হোক,পরদিন খুব ভোরে ই শুরু হলো আমাদের জয়পুর ট্যুর।
আমরা কি প্রথম দিনেই সিটি ট্যুর এ গিয়েছিলাম?? আজ আর মনে নেই। শুধু মনে আছে আমরা দেখেছি -হাওয়া মহল,জল মহল,যন্তর-মন্তর,(টাইম ঘড়ি, ,ছায়া ঘড়ি)। আরো কত কি।পরদিন খুবই সকালে রওনা দিতে হলো আমির ফোর্টের উদ্দ্যেশ্যে। যেটাকে মানসিংয়ের দূর্গও বলে। যেতে যেতে দেখলাম রাস্তার ধারে মুক্ত অবস্থায় নীল গাই,নীলা হরিণ,সম্বর, ময়ূর সহ আরো নাম না জানা প্রানী ঘুরে বেড়াচ্ছে মাঠের মধ্যে।
যে কোন দূর্গে গেলেই হাটতে হয় প্রচুর। আমি আবার অত বেশী হাটতে পারিনা। আমি কেবলি পিছিয়ে পড়ি।পিছিয়ে পড়ার আরেকটি কারন আছে। ছবি তোলা। আর তাই বারবার দল ছুট হয়ে যাই। আমি আমার ননদ লুছি আর বোন লিপু একসাথে থাকি। বাকিরা চলে যায় অনেক দূরে। গাইড বিরক্ত হয়ে একটু পর পর আমাদের খুজতে আসে। সেখানে মুবাইলে নেটওয়ার্ক ছিলনা। অনেক বেশী বিদেশী পর্যটক ছিল। প্রচন্ড ভীড়। আমাকে খুবই অবাক করেছিল এই দূর্গ।
আমি শুধুই ভাবছিলাম এত আগে সম্ভবতঃ ষোল শতকে এত কারোকার্যময় আর এতো বিশাল দূর্গ কিভাবে তৈরী করলো এই পাহাড়ের উঁচু নীচু জায়গায়? আগেরদিনের শাসকেরা কি শুধু দূর্গ তৈরি আর যুদ্ধ নিয়েই ব্যস্ত থাকতো? আর রংমহল? মানসিংহের রংমহল পর্যন্ত আমি যেতে পারিনি। কারন পাহাড় থেকে নেমে আবার উঠতে হবে অনেক উপরে। এ রংমহলের আছে অনেক ভয়ংকর ইতিহাস। আমি বসেছিলাম দুর্গের ভেতরে রাজস্থানি এক পরিবারের সাথে। ফেরার পথেই আমরা জলমহল দেখলাম। চারদিকে পাহাড় বেস্টিত অফুরান জল আর তার মধ্যেই মহল।সে পর্যন্ত পর্যটকদের যাওয়া নিষেধ। দূর থেকেই শুধু দেখতে হয়।
পরদিন আমরা দেখতে গেলাম আযমীর শরীফ।আজমীর শরীফ যাবার পথের কথা না বললেই নয়। রাস্তার দু পাশেই গ্রানাইট পাথরের অসংখ্য পাহাড়,ফুল গাছ আর শুধু এগিয়ে চলা। টুল বক্স ছাড়া রাস্তার কোথাও গাড়ী এক মিনিট থামেনা। এত লম্বা পথ পাড়ি দিতে কোনই বিরক্তি লাগেনি জ্যামহীন,আবর্জনাহীন এক পরিচ্ছন্ন রাস্তার কারনে। কিন্তু এ আনন্দ হতাশায় পরিনত হয়েছিল আজমীর শরিফের পরিবেশের কারনে।অন্য সব মাজারের মতোই এখানেও শির্ক আর কুসংস্কার ভর্তি আচরণ।কর্মকাণ্ড। যাওয়া মাত্রই ফুলের ঝাড়ু দিয়ে মাথায় বাড়ি দিল।মানুষ বিভিন্ন মানত করছে।ময়লা পানি বোতলে ভরে নিয়ে যাচ্ছে।আরো কত কি? আসলে মাজার সংস্কৃতি আমার ভালো লাগেনা বলেই হয়তো এটাও ভালো লাগেনি।
রাতে আমরা গেলাম রাজস্থানি কালচারাল সেন্টার -চৌকিধানী।সম্ভবত ৬শ রুপি করে মাথাপিছু লেগেছিল ঢুকতে। ওরা ওদের সংস্কৃতি অনুযায়ী সিদূর দিয়ে আমাদের বরন করে নিয়েছিল। আমাদের অস্বস্থিটা তারা বুঝতে পারেনি। ভেতরে এমন অনেক কিছু আছে যা আগে দেখিনি। যেটা না বললেই নয় সেটা হলো পাতায় ২২ পদের খাবার দিয়েছিল যার কিছুই আমরা খেতে পারিনি তবে মইনুল ভাই আর ফিরোজ ভাই খুবই সাবলীলভাবে খেয়ে গেছেন।
রাজস্থান এসেও আমাদের মরুভূমি দেখা হলো না। আর এ আফসোস নিয়েই ভবিষ্যতে আবারও যাবার চিন্তা নিয়ে পরদিন আমাদের ফিরতে হলো দিল্লিতে।
মাহিনুর জাহান নিপু
বিভাগ : জীবনযাপন
- দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষির সকল স্তরে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
- মাধবদীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- নরসিংদীর দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দ
- পথচারিদের পাশে পানি ও স্যালাইন নিয়ে একদল যুবক
- পলাশে কিশোরী ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
- সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
- পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি-মনা, সম্পাদক-রনি
- শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত
- উপজেলা নির্বাচনে যে কেউ প্রভাব বিস্তার করবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে: নরসিংদীতে ইসি মোঃ আলমগীর
- নিলক্ষায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ১০
- দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষির সকল স্তরে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
- মাধবদীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- নরসিংদীর দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দ
- পথচারিদের পাশে পানি ও স্যালাইন নিয়ে একদল যুবক
- পলাশে কিশোরী ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
- সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
- পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি-মনা, সম্পাদক-রনি
- শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত
- উপজেলা নির্বাচনে যে কেউ প্রভাব বিস্তার করবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে: নরসিংদীতে ইসি মোঃ আলমগীর
- নিলক্ষায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ১০