ঘরে ঘরে ঠাণ্ডা কাশি জ্বরসহ শীতজনিত নানা রোগ
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৩১ এএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৪ পিএম
জীবনযাপন ডেস্ক:
কভিড-১৯ বা নভেল করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মুখে অস্থিরতার আড়ালে দেশে দিনে প্রায় ৫ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত নানা রোগে। সব মিলিয়ে ১০৮ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ লাখ ২১ হাজার ৩৮৪। মারা গেছে ৬১ জন।
২০১৫ সাল থেকে সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে দেখা যায়, এর আগে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ছিল ২০১৭-১৮ সালে ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৭ জন। মৌসুমের ওই পাঁচ মাসে মৃত্যু হয়েছিল ২০ জনের। আর ২০১৫ থেকে গত বছর পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয় ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৯ জন এবং এই ৪ বছরে মৃত্যু হয় মোট ৮০ জনের। সেই হিসাব ধরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের মতো এক মৌসুমে এত আক্রান্ত এর আগে কাছাকাছি সময়ে দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক তারতম্য ও মানুষের অসচেতনতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে একই সঙ্গে রোগের জটিলতা ও ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতাকেও দায়ী করছে কেউ কেউ। সরকারি তথ্য অনুসারেই এই মৌসুমি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ বছরের যোগফলের দ্বিগুণেরও বেশি। আবার মৃত্যুহারও যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, একদিকে জলবায়ুজনিত তারতম্য অন্যদিকে বায়ুদূষণ এবার রোগের প্রকোপ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে শ্বাসতন্ত্রের রোগ অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতার মাত্রা বাড়ানো খুবই জরুরি। তিনি বলেন, শিশু ও বয়স্কদের জটিলতা বেশি দেখা যায়। পরিবারের অন্যদের উচিত তাদের দিকে বেশি নজর রাখা। এ ছাড়া আগে থেকেই যারা ক্রনিক রোগে ভুগছে তাদের ক্ষেত্রেও এমন মৌসুমি রোগের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। জটিলতা বেড়ে গেলে চিকিৎসা কঠিন হয়ে পড়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৫-১৬ সালে এই তিন ধরনের শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৩৫৯ জন আর ওই বছর মৃত্যু হয় ৩৮ জনের। পরে ২০১৬-১৭ সালে আক্রান্ত হয় ৬১ হাজার ৫৬৪ জন, মারা যায় ১১ জন, ২০১৭-১৮ সালে আক্রান্ত হয় এক লাখ ১৪ হাজার ৬৭ জন আর মারা যায় ২০ জন, ২০১৮-১৯ সালে আক্রান্ত হয় ৮৬ হাজার ৭৫৯ জন এবং মৃত্যু হয় ১১ জনের।
আর চলতি মৌসুমে গত ১ নভেম্বর থেকে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত ১০৮ দিনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ২১ হাজার ৩৮৪ জন এবং মৃত্যু ঘটেছে ৬১ জনের। এর মধ্যে এবার গত ১ নভেম্বর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৮৭ হাজার ৭৬০ জন, ঠাণ্ডাজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ২ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ জন এবং ঠাণ্ডাজনিত অন্যান্য রোগে দুই লাখ ২৭ হাজার ২৮ জন। এর মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের রোগে মৃত্যু ঘটেছে ২২ জনের, ডায়রিয়ায় ৯ জনের ও অন্যান্য শীতজনিত রোগে ৩০ জনের।
রোগতত্ত্ব বিজ্ঞানী ও আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহামুদুর রহমান জানান, জলবায়ুর প্রভাব, আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ ও মানুষের রোগ প্রতিরোধমূলক অসচেতনতার কারণে যেমন মৌসুমি রোগের প্রকোপ বাড়ছে, আবার এসব রোগের জটিলতাও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। সেই সঙ্গে ব্যবস্থাপনায়ও ঘাটতির বিষয়টি রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে সব হাসপাতালে এখনো আমরা সব ধরনের চিকিৎসার সুযোগ পর্যাপ্তভাবে সৃষ্টি করতে পারিনি। অন্যদিকে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে মানুষ হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে আসে রোগ জটিল হয়ে ওঠার পরে। অথচ এ ধরনের রোগগুলো প্রাথমিকভাবে চিকিৎসার আওতায় আনা গেলে সবদিক থেকেই মানুষের সুরক্ষা মেলে। ভোগান্তিও যেমন কমে তেমন মৃত্যু হারও কমানো যায়।
ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, মৌসুমি রোগের পর্যবেক্ষণের ওপরেও জোর দেওয়া জরুরি। তাতে করে এর গতিবিধি এবং পূর্বাপর প্রকোপ কম না বেশি তা নিরূপণ করে করণীয় ঠিক করা সহজ হয়।
শ্বাসতন্ত্র বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রাশেদুল হাসান জানান, দেশে শ্বাসতন্ত্রের রোগের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। চিকিৎসায়ও দেখা দিয়েছে জটিলতা। কিন্তু সেই অনুসারে ব্যবস্থাপনা আরো বেশি প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার জানান, ৬৪ জেলা ও ২৯৬টি উপজেলা পর্যায় থেকেও তথ্য আসছে প্রতিদিন। আমরা শীতজনিত রোগের ক্যাটাগরিতে রাখা ওই হিসাব তিনটি ভাগে বিভাজন করি। এর মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়রিয়া ও শীতজনিত আরো অন্যান্য রোগকে হিসাব করা হয়। এতে এবার দেখা গেছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শীতজনিত রোগে দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যু অনেক বেশি। প্রতিবছর নভেম্বর থেকে পরের বছরের মার্চ পর্যন্ত এই শীতজনিত রোগের হিসাব সংরক্ষণ করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের তথ্য অনুসারে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫২১ জন।
বিভাগ : জীবনযাপন
- বেলাব উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
- জেলা প্রশাসন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত
- শিবপুরে স্মার্ট কার্ড বিতরণ উদ্বোধন
- নরসিংদীতে অর্থনৈতিক শুমারি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন
- নরসিংদীতে ইসকন নিষিদ্ধ ও আস্তানা বন্ধ করতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম
- নরসিংদীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ১
- আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা
- নরসিংদী উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে ভাংচুর, ক্ষতিপূরণ আদায় করে মীমাংসা করলেন ইউএনও
- মৎস্য আহরণ বন্ধে দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
- মৎস্য অধিদপ্তরের জন্য ৮২টি নতুন পদ সৃজন
- বেলাব উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
- জেলা প্রশাসন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত
- শিবপুরে স্মার্ট কার্ড বিতরণ উদ্বোধন
- নরসিংদীতে অর্থনৈতিক শুমারি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন
- নরসিংদীতে ইসকন নিষিদ্ধ ও আস্তানা বন্ধ করতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম
- নরসিংদীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ১
- আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা
- নরসিংদী উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে ভাংচুর, ক্ষতিপূরণ আদায় করে মীমাংসা করলেন ইউএনও
- মৎস্য আহরণ বন্ধে দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
- মৎস্য অধিদপ্তরের জন্য ৮২টি নতুন পদ সৃজন