অর্থ সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো

২৮ এপ্রিল ২০২২, ১০:৩৫ এএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ এএম


অর্থ সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো
সংগৃহিত ছবি

অর্থনীতি ডেস্ক:

ঈদের বাজারের চাপ সামলাতে অর্থ সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের ঘাটতি প্রকট। ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদে ধার করছে। নগদ টাকার সরবরাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ধারের মাধ্যমে নগদ টাকার ঘাটতি মেটানোর সুযোগ নিশ্চিত করতে আন্তব্যাংক মানি মার্কেট প্ল্যাটফর্মগুলো ২৯ ও ৩০ এপ্রিল খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানা গেছে, গতকাল কলমানি বাজারে ব্যাংকগুলোর মধ্যে লেনদেনের গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ১০ শতাংশ ও সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে গতকাল কলমানি বাজারে এক দিনে লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ১২২ কোটি টাকা। আর গত সপ্তাহের শেষ দিনে সুদের গড় হার ছিল ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৩ দশমিক শূন্য শতাংশ ও সর্বোচ্চ সুদের হার ছিল ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সপ্তাহের শেষ দিনে লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা।

ব্যাংকগুলোর ট্রেজারি কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ মানি মার্কেট ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বামডা) তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশের মুদ্রাবাজারে ব্যাংক এশিয়া, আইএফআইসি, উত্তরা ও পূবালী ব্যাংক ধারদাতা ব্যাংকের তালিকায় রয়েছে। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক ধার করছে। আর এবি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা, ঢাকা, এনআরবিসি, মেঘনা, সাউথ বাংলা, মিডল্যান্ডসহ নতুন-পুরোনো কয়েকটি ব্যাংক তারল্য চাহিদা মেটাতে বেশি ধার করছে।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, ‘আমাদের বিপুল সংখ্যার এটিএম বুথগুলোয় প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা রাখতে হচ্ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। আমাদের হাতে থাকা নগদ অর্থ এটিএম বুথে চলে যাওয়ায় ধার করতে হচ্ছে।’

এদিকে মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেপো ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ধার দিচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক এএলএস হিসেবে মোট ১৬টি ব্যাংককে ৬ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা ধার দিয়েছে। এর মধ্যে রেপোর সুদহার ছিল ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে এএলএস ধার দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের সুদহার বেঁধে দেওয়ায় ভালো অবস্থানে থাকা ধারদাতা ব্যাংকগুলো এখন কলমানির পরিবর্তে শর্ট নোটিশে ২ থেকে ১৪ দিন মেয়াদি ধার দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সুদহার ৯ শতাংশের বেশিও হতে দেখা গেছে।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, হঠাৎ করে মুদ্রাবাজারে অর্থের টান পড়েছে। প্রয়োজন মেটাতে সোয়াপ, রেপো, শর্ট নোটিশসহ নানা মাধ্যমে ধার করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতে তারল্যের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। ২০২১ সালের জুনে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ ২ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। সেই হিসেবে আলোচিত সময়ে ব্যাংক খাতে তারল্য কমেছে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম। সেই সঙ্গে গত কয়েক মাসে রেমিট্যান্সও কম এসেছে। ব্যাংক খাতে নগদ টাকা রয়েছে কিন্তু বাজারে চাহিদা এর চেয়ে বেশি। সে কারণে কলমানিতে লেনদেন বেড়েছে। কলমানি মার্কেটে চাপ বেড়ে যাওয়ায় সুদহারও বাড়ছে।

সূত্র: আজকের পত্রিকা


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও