দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল: মার্কিন জরিপ

০৯ আগস্ট ২০২৩, ০৪:১৯ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১০ এএম


দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল: মার্কিন জরিপ

টাইমস ডেস্ক:

বাংলাদেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এর জরিপ। ওই জরিপে একই সময়ে বিরোধী দলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলেও উল্লেখ করা হয়। জরিপে অংশ নেওয়াদের ৫৩ শতাংশ বলছে সরকার সঠিক পথে নেই। অন্যদিক, প্রায় ৯২ শতাংশ বলেছেন যে, জাতীয় নির্বাচনে তারা ভোট দিতে চান।

আইআরআইয়ের ওয়েবসাইটে ‘ন্যাশনাল সার্ভে অব বাংলাদেশ, মার্চ-এপ্রিল ২০২৩’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। দেশের ৬৪টি জেলার ১৮ বছর বা তার বেশি পাঁচ হাজার অংশগ্রহণকারীর ওপর ওই জরিপ চালানো হয়। আইআরআইয়ের সেন্টার ফর ইনসাইটস ইন সার্ভে রিসার্চের চালানো ওই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭০ শতাংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল বলে উঠে এসেছে।

তবে, ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো বেশির ভাগ বাংলাদেশি বিশ্বাস করছে, বাংলাদেশ সঠিক পথে নেই। এর সংখ্যা প্রায় ৫৩ শতাংশ। আর মাত্র ৪৪ শতাংশ বলেছেন, বাংলাদেশ সঠিক পথে চলছে অথচ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এই সমর্থন ছিল ৭৬ শতাংশ। ক্ষমতাসীন সরকারের থেকে মানুষের এই সমর্থন হারানোর পিছনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে মূল কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন জরিপে অংশগ্রহণকারীরা। অংশগ্রহণকারী একজন বলেন, "আমার স্বামীর বেতন বাড়েনি, কিন্তু নিত্যপণ্যের দাম প্রতিদিন বাড়ছে।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে একই সময়ে বিরোধী দলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ২০১৯ সালে বিরোধী দলের যেখানে সমর্থন ছিল মাত্র ৩৬ শতাংশ সেখানে এখন সমর্থন বেড়ে হয়েছে ৬৩ শতাংশ।

নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশিরা ভোট দিতে আগ্রহী। জরিপে অংশ নেওয়াদের প্রায় ৯২ শতাংশ বলেছেন যে তারা জাতীয় নির্বাচনে ভোট তারা ভোট দিতে চান। এদের প্রায় ৫৭ শতাংশ ভোট দিতে বেশি আগ্রহী। যারা ভোট দিতে চান না তারা নির্বাচনী জালিয়াতি এবং ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যাকে ভোটদানের প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তন চান ৪৪ শতাংশ মানুষ। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ মনে করেন নির্বাচনী প্রশাসনের অধীনে বিরোধীদের নির্বাচনে যোগ দেওয়া উচিত।

আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক স্টিভ সিমা বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য জনসমর্থন দেখা উৎসাহব্যঞ্জক। ওই জরিপে বাংলাদেশীদের আগামী নির্বাচনে তাদের মৌলিক চাওয়া ও প্রকৃত পছন্দ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়েছে।

জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার কাজকে অংশগ্রহণকারীরা কিভাবে মূল্যায়ন করে। এ ক্ষেত্রে পাঁচটি সম্ভাব্য উত্তর থেকে একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। ৩০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী শেখ হাসিনার কাজকে ‘খুব ভালো’ বলে মূল্যায়ন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এর সেন্টার ফর ইনসাইটস ইন সার্ভে রিসার্চের ওই জরিপে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী ৫ হাজার উত্তরদাতা অংশগ্রহণ করেন। তারা আগামী নির্বাচনে ভোটের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক। জরিপের নমুনাটি আট বিভাগের ৬৪টি জেলায় করা হয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসির অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৮৩ সালে আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১০০টিরও বেশি দেশে রাজনৈতিক দল, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং গণতান্ত্রিক শাসনের জন্য কাজ করছে মার্কিন ওই প্রতিষ্ঠানটি। এ পর্যন্ত ২০০টির বেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট টিভি অনলাইন


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও