বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:০০ পিএম | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৪ পিএম


বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশে জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি (Iwama Kiminori) আজ বুধবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে তাদের মধ্যে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ২০২৩ সালে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫১ তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বন্ধু দেশ হিসেবে জাপান বাংলাদেশের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।

ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, তিনি জাপানি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করবেন যাতে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের সক্ষম হয়।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় ও স্থানীয় উন্নয়নে জাপান বন্ধুদেশ হিসাবে আরো সম্পৃক্ত হতে চায় যাতে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।

১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, জাপান ও বাংলাদেশ পারস্পরিক সুবিধার্থে টেকনোলজি, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ে আদান-প্রদান করতে পারে যাতে উভয় দেশ লাভবান হতে পারে।

এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে জাপানের সহায়তায় চলমান বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। তারা উভয়ে উন্নয়নমূলক কাজে এই সম্পৃক্ততা আরও জোরদার করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

জাপানের রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে বিনিয়োগ করার জন্য এ সময় আগ্রহ প্রকাশ করেন। জাপানের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপেক্ষায় আছে বলেও জানান তিনি ।

জাপানের নারুতো শহর এবং বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ শহরের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে উল্লেখ করে ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, এই দুটি শহরের মধ্যে সিটি টু সিটি পার্টনারশিপ সহযোগিতা চুক্তি হতে পারে। এতে দুটি শহরই লাভবান হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কিমিনোরি বলেন, জাপান বাংলাদেশ হতে দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী। এ সময় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোনের জন্য সংযুক্ত সড়ক এবং অন্যান্য অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে তাতে জাপানি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও জানান জাপানের রাষ্ট্রদূত।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে তাতে জাপানের আরও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নসহ নানা ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে জাতি হিসেবে বাংলাদেশের সক্ষমতার পরিচয় আজ বিশ্বে উজ্জ্বল।

তিনি আরো বলেন, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের মত বৃহৎ প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং জাপানের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।

এ সময় মন্ত্রী জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, জাতির পিতার অবদান, সেনা শাসনের ফলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হওয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম ও জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এ সময় উভয় দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার ও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার জন্য সম্মত হন। বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও