পৌরসভা নির্বাচন: চলতি সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা

১৬ নভেম্বর ২০২০, ০৩:৫৬ পিএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ এএম


পৌরসভা নির্বাচন: চলতি সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সারা দেশে দুই শতাধিক পৌরসভায় কয়েক ধাপে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর অংশ হিসেবে আগামী ডিসেম্বরে শুরু হচ্ছে এ ভোট। রোববারের (১৫ নভেম্বর) মধ্যে ১৯৬ পৌরসভার সব ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইসি নির্দেশ অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করেছে ইসির কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে তফসিল ঘোষণার পর দুই দিনের মধ্যে ভোট কেন্দ্রের তালিকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতেও বলা হয়েছে।

এদিকে গত ১১ নভেম্বর ১৯৬ পৌরসভার ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহ করেছেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা। তারা জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে এই ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন পৌরসভায় ইতিমধ্যে ভোট কেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে।

এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলার কিশোরগঞ্জ, হোসেনপুর, কটিয়াদী, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর এবং ভৈরব পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গত ১০ নভেম্বর ভোট কেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করা হয়। দাবি আপত্তি শেষে গতকাল এসব পৌরসভার ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। একইভাবে দেশের বিভিন্ন পৌরসভায় ভোট কেন্দ্রের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে।

ইসি জানিয়েছে, এবার ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হবে পৌরসভা নির্বাচন। আগামী ডিসেম্বরে প্রথম ধাপে ২০/২৫ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হবে। এ জন্য চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন এসব নির্বাচনের তফসিল দেবে ইসি। কয় ধাপে ভোট হবে তা চূড়ান্ত না হলেও মে মাসের মধ্যে সব পৌরসভায় ভোট শেষ করতে চায় কমিশন। তবে অধিকাংশ পৌরসভা নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পৌরসভাসহ যেসব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হবে, সেসব প্রতিষ্ঠানে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ ভোট নেওয়া হবে। এই ধাপে ২০/২৫ টি পৌরসভায় ভোট হতে পারে।

সিইসি বলেন, পৌরসভায় ভোট নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। তবে ইউনিয়ন বা উপজেলা পরিষদের সব নির্বাচন ইভিএমে করা সম্ভব হবে না। কিছু সংখ্যক নির্বাচন হয়তো ইভিএমে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, কয়েকটি ধাপে পৌর নির্বাচন করতে হবে। হয়তো পাঁচটি ধাপে হতে পারে। তবে কয় ধাপে হবে তা এখনো ঠিক হয়নি।

নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, আমরা চাচ্ছি পৌরসভা নির্বাচন ইভিএমে করব। এ জন্য আমাদের ইভিএমে ক্যাপাসিটিটা দেখতে হবে। আমরা একসঙ্গে কতগুলোর ভোট করতে পারব। ডিসেম্বরের পর ফেব্রুয়ারিতে হয়তো আমাদের কিছুসংখ্যক নির্বাচন হবে।

এদিকে পৌর নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে সরগরম তৃণমূলের রাজনীতি। ভোট সামনে রেখে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। গণসংযোগের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন পেতে শুরু করেছেন লবিং। এবারও একক প্রার্থী চূড়ান্তে হিমশিম খাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। পৌরসভা নির্বাচনে আমাদের দলের তৃণমূলের জনপ্রিয়, সংগঠনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে এবং দায়িত্ব পালনে সক্ষম-এমন নেতাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা বিতর্ক রয়েছে, তাদের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারপরও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মনোনয়ন চূড়ান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরাই দলের প্রাণশক্তি। সব সময়ই বিএনপি তাদের মতামতকে মূল্যায়ন করেছে। দলের সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে তৃণমূলকে আরও প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তারাই নির্ধারণ করবেন তাদের প্রতিনিধি হওয়ার জন্য কে সবচেয়ে যোগ্য। এ প্রক্রিয়ায় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হলে তৃণমূলেও কোনো ক্ষোভ বা অসন্তোষ থাকবে না বলে আমরা মনে করি।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি বরাবরই নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আমরা দলীয় ভাবে অংশ নেব। প্রতিটি পৌরসভায় প্রার্থী দেব। কারা প্রার্থী হবেন তা দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভায় চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, আমরা এককভাবেই নির্বাচনে অংশ নেব। এতে দল শক্তিশালী হয়, দলীয় প্রার্থীর মাঠপর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তাও যাচাই করা যায়। (সূত্র: আমার সংবাদ)


বিভাগ : বাংলাদেশ