করোনাভাইরাস: দেশে মোট মৃত্যু ১৯৬৮, শনাক্ত ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১, সুস্থ্য ৬৮ হাজার ৪৮ জন

০৩ জুলাই ২০২০, ০৯:৪৬ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম


করোনাভাইরাস: দেশে মোট মৃত্যু ১৯৬৮, শনাক্ত ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১, সুস্থ্য ৬৮ হাজার ৪৮ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরও ৪২ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৯৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১১৪ জন। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬০৬ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬৮ হাজার ৪৮ জন। শুক্রবার (৩ জুলাই) কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশে এখন মোট ৭১টি পরীক্ষাগারে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ফলাফল এসেছে ৬৩টি পরীক্ষাগার থেকে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েয়ে ১৪ হাজার ৭৮১টি, পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৫০টি। এরমধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১১৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ২৬ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৩ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ২৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্য বুলেটিনে আরো জানানো হয়, মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিবেচনায় ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৭ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ৩ জন। মারা যাওয়া ৪২ জনের মধ্যে ৩২ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন ১১ জন। অঞ্চল বিবেচনায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জন, রংপুর বিভাগে চার জন, বরিশাল বিভাগে একজন এবং খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে তিন জন করে রয়েছেন।

এছাড়া দেশের হাসপাতালগুলোর সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন ৪ হাজার ৭০৮ জন করোনা রোগী, আর আইসিইউতে আছেন ২০৯ জন। সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৭৮ জন, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৬৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৭৭ জন, মুক্ত হয়েছেন ৬৮৭ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ২৯ হাজার ৩৭৯ জন। আর আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৪৩২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৯৪৭ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭১৪ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন তিন লাখ ৭১ হাজার ৯০৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭৬৬ জন। এ পর্যন্ত মোট মুক্ত হয়েছেন তিন লাখ আট হাজার ৩৪৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৩ হাজার ৫৫৬ জন।

করোনাতে মারা যাওয়াদের ৮৫৫ জনই ষাটোর্ধ্ব:

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ১ হাজার ৯৬৮ জন। এর মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী রয়েছেন ৮৫৫ জন। এছাড়া মোট মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৫৭১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৯০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৪৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৭০ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২৩ জন এবং শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১২ জন রয়েছেন। শুক্রবার কোভিড -১৯ নিয়ে অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

দেশে করোনাতে আক্রান্ত হওয়া প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় গত ১৮ মার্চ। তার বয়স ছিল ৭০ বছর। তিনি বিদেশ থেকে আসা ও সংক্রমিত একজনের মাধ্যমে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিল রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক তখন বলেছিলেন, আমরা বার বার বয়স্কদের বিশেষ নিরাপত্তার জন্য বলছি।

আজ অনলাইন বুলেটিন শেষ করার আগে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, নিজের সুরক্ষা নিজের হাতে। যেসব স্বাস্থ্যবিধি বলা হচ্ছে, সেগুলো সবসময় মেনে চলার অনুরোধ করছি। নিজে সুস্থ থাকুন এবং পরিবারের সবাইকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখুন।

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাসের ছোবলে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ প্রায়। মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ২৪ হাজারের বেশি। তবে সাড়ে ৬১ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।


বিভাগ : বাংলাদেশ