জাতির এই দুর্দিনে চিকিৎসা দিতে যারা শর্ত দিয়েছেন, তাদের প্রয়োজন নেই: প্রধানমন্ত্রী

০৭ এপ্রিল ২০২০, ০৯:১৭ পিএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ এএম


জাতির এই দুর্দিনে চিকিৎসা দিতে যারা শর্ত দিয়েছেন, তাদের প্রয়োজন নেই: প্রধানমন্ত্রী
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনাভাইরাসের প্রকোপের সময় দেশে অনেক চিকিৎসক গা ঢাকা দিয়েছেন। অনেকেই কাজ করছেন না। আবার কেউ কেউ করোনার চিকিৎসার জন্য শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। এসব চিকিৎসকের ব্যাপারে প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্যোগে চিকিৎসা দিতে যারা শর্ত দিয়েছেন, তাদের প্রয়োজন নেই। মঙ্গলবার ( ৭ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৫টি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মত‌বি‌নিময়ের সময় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে যেসব চিকিৎসক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তাঁদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। তাঁদের নামে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমা করে দেওয়া হবে। এছাড়া তাঁদের জন্য রয়েছে আরো পুরষ্কার। আর যাঁরা জাতির এই দুর্দিনে কাজ করছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, যাঁরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষের পাশে নেই তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তাঁরা আদৌ ডাক্তারি করতে পারবেন কি-না, তা আমি এখনই বলতে চাই না, তবে আমি তাঁদের কর্মকাণ্ড দেখতে চাই। তিনি বলেন, তাঁরা যদি এখনো ফিরে আসেন তবে আমি তাঁদের পরবর্তী তিন মাস দেখব। তাঁদের কাজের ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করব।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ত্রাণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য কর্মচারীসহ যাঁরা কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা ব‌লে‌ন, মানুষের দুর্ভোগের সময় ত্রাণ নিয়ে কেউ নয়-ছয় কর‌বেন না। তাহলে কিন্তু রক্ষা পাবেন না। নয়-ছয় করলে আপনাকে ধরা পড়তেই হবে। টাকা-পয়সা কিন্তু লুকানো যায় না। দুঃসম‌য়ে কেউ দুর্নীতি করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে, তাকে কিন্তু আমি ছাড়বো না।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে যাওয়ার সংখ্যা বেশি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা একদিক থেকে ভালো খবর। তবে প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাক, এটা চাই না। আমরা চাই দ্রুত এটি নিয়ন্ত্রণ হোক। এর জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এখন বিশ্বব্যাপী এই ঘটনা ঘটেছে, উন্নত দেশও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। বাঙালিরাও অনেক জায়গায় মৃত্যুবরণ করছে। যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, আমি তাদের সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

একটি বিষয় দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী রোগাক্রান্ত, হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে সে চিকিৎসা পায়নি। এটি খুবই কষ্টকর। দুঃখজনক।

প্রধানমন্ত্রী ব‌লেন, সবাই সতর্ক থাক‌বেন। সতর্ক থাক‌লে কেউ ক্ষ‌তিগ্রস্ত হ‌বেন না। করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে হলে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমরা যে সতর্কবাণী দিয়েছি এই সতর্কতা মেনে চলবেন। তাহ‌লে অনেক জীবন রক্ষা পা‌বে। এপ্রিল মাসটা নি‌য়ে খুব দু‌শ্চিন্তায় আছি। ত‌বে সতর্ক থাক‌লে আমা‌দের দু‌শ্চিন্তা অনেকটা কাট‌বে।

অনুষ্ঠান‌টি প‌রিচালনা ক‌রেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যাল‌য়ের মুখ‌্যস‌চিব ড. আহমদ কায়কাউস।


বিভাগ : বাংলাদেশ