করোনা সংকট: ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

০৫ এপ্রিল ২০২০, ০১:২৭ পিএম | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১৯ পিএম


করোনা সংকট: ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসে দেশে এখন পর্যন্ত ৮ জন মারা গেছে। একটি মৃত্যুও কাম্য নয়। যারা মারা গেছেন, বেশিরভাগই ৭০ এর ওপরে। বেশিরভাগ মানুষেরই সুস্থতার হার বেশি। তাই আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়াতে দেশে এখনও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করছি।

রোববার (৫ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে এই সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প উৎপাদন, শেয়ারবাজারে এরই মধ্যে বিরুপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশ্ব এবার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জাতীয় কমিটি করা হয়েছে। গরিব, দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য ওএমসে ১০ টাকা কেজি চাল দেয়া হবে।

আর্থিক সহায়তার পরিমাণ হবে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা যা জিডিপি’র প্রায় ২.৫২ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজগুলো হলো:

প্যাকেজ-১: ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা দেওয়া, ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দেওয়ার লক্ষ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে। ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্ট শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেওয়া।

এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। ঋণের সুদের অর্ধেক অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ঋণ গ্রহিতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে।

প্যাকেজ-২: ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদান: ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদানের লক্ষ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে। ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেবে। এ ঋণ সুবিধার সুদের হারও হবে ৯ শতাংশ। ঋণের ৪ শতাংশ সুদ ঋণ গ্রহিতা শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে।

প্যাকেজ-৩: বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) সুবিধা বাড়ানো: ব্লক টু ব্লক এলসির আওতায় কাঁচামাল আমদানি সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইডিএফের বর্তমান আকার ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। ফলে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ইডিএফ তহবিলে যুক্ত হবে। ইডিএফের বর্তমান সুদের হার এলআইবিওআর + ১ দশমিক ৫ শতাংশ (যা প্রকৃত পক্ষে ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ) হতে কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হবে।

প্যাকেজ-৪: প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম নামে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করবে। এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৭ শতাংশ।

প্যাকেজ-৫: ইতোপূর্বে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন/ভাতা পরিশোধ করার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি আপৎকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন ৪টিসহ মোট ৫টি প্যাকেজে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ হবে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা যা জিডিপি’র প্রায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও