করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯): বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক, মৃত্যু বেড়ে ৫৮৩৯

১৫ মার্চ ২০২০, ১২:৫৩ পিএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৩ পিএম


করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯): বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক, মৃত্যু বেড়ে ৫৮৩৯
ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারি এখন বিশ্বজুড়ে এক ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম। প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে শত শত নতুন মুখ এবং আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। শনিবার পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আরও ৪১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ফলে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সর্বমোট ৫৮৩৯ জন মারা গেল। বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৩০ জন। আর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৫ হাজার ৯৩৩ জন।

সবচেয়ে ভয়াবহ ইতালি-ফ্রান্স-স্পেন: চীনের সীমানা পেরিয়ে এই ভাইরাস থাবা বসিয়েছে ইউরোপ, এশিয়া, আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। অর্থাৎ বরফে আচ্ছাদিত এন্টার্কটিকা ছাড়া বিশ্বের সবক’টি মহাদেশেই হানা দিয়েছে ভয়াবহ করোনা। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ইউরোপের। যে কারণে এ অঞ্চলটিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারির কেন্দ্রস্থল হিসাবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( ডব্লিউএইচও)। চীনের চেয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে প্রতিদিন এ ভাইরাস দ্রুত ছড়ানো ও মৃত্যুহার বাড়ায় শুক্রবার এ ঘোষণা দেয় সংস্থাটি।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্সের। গত ৭২ ঘণ্টায় স্পেনে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের ঘটনা দ্বিগুণ হওয়ায় দেশ জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রধানমন্ত্রী এদওয়ার্ড ফিলিপ্পে। ফলে দেশটির ৬ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার সবাইকে ঘরে থাকতে হচ্ছে। শনিবার পর্যন্ত সেখানে মোট ৯১ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন আরও সাড়ে ৪ হাজার মানুষ। তবে এ অবস্থার মধ্যেও সেখানে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রোববারের স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ্পো। এর আগে সোমবার থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা এবং ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুল ম্যাক্রো।

করোনায় আক্রান্ত স্পেনের ফার্স্ট লেডি: ইউরোপে ইতালির পর সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রামণের ঘটনা ঘটেছে স্পেনে। ফলে এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শুক্রবার দেশজুড়ে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট প্রেড্রো সানচেজ। এই ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই তার স্ত্রী ও স্পেনের ফাস্ট লেডি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর এসেছে। দ্য স্ট্রেইটস টাইমস জানায়, প্রেসিডেন্ট সানচেজের স্ত্রী বেগোনা গোমেজের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে তিনি কোথায় কোয়ারেন্টাইন আছেন এবং কোথায় তাকে চিকিৎসা হচ্ছে এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি পত্রিকাটি। স্পেনে করোনায় শনিবার পর্যন্ত ১৯৩ জন মারা গেছে এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬২৫০। এদের মধ্যে কেবল শুক্রবারই প্রাণ হারিয়েছেন ১২০ জন এবং রাতারাতি আক্রান্ত হয়েছেন ১৫০০ জন। এর আগে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার প্রস্তুতি হিসাবে শুক্রবার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট সানচেজ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন ট্রাম্প: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত কিনা তা জানতে পরীক্ষা (টেস্ট) করা হয়েছে। তাঁর এই পরীক্ষা নেগেটিভ হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের ফিজিশিয়ান। শনিবার হোয়াইট হাউজের ফিজিশিয়ান শন কনলি এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্টের যে পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে নেগেটিভ রেজাল্ট এসেছে। তিনি বলেছেন, ব্রাজিলের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের এক সপ্তাহ পর তিনি লক্ষণমুক্ত। সম্প্রতি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের প্রেসসচিব ফাবিও ওয়ানগারটেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। পরে জানা যায় ফাবিও ওয়ানগারটেন করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু ওই বৈঠকের পরেও ট্রাম্প সেলফ আইসোলেশনে যাননি। এ নিয়ে আলোচনা শুরু হলে হোয়াইট হাউজ থেকে পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয়। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০ মানুষ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৫৪ জন।


বিভাগ : বিশ্ব


এই বিভাগের আরও