অবশেষে ভারতে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে মুক্তি দিয়েছে আদালত

৩০ আগস্ট ২০২০, ০৬:৪৯ পিএম | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম


অবশেষে ভারতে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে মুক্তি দিয়েছে আদালত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

অবশেষে সকল জটিলতা কাটিয়ে ভারতে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে আসামের ধুবড়ি জেলা আদালত। শনিবার (২৯ আগস্ট) এ আদেশের ফলে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা আটক ২৫ কর্মজীবীর দেশে ফিরে আসতে আর কোনো বাধা রইল না।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর ও বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার ভিকটিম রেসকিউ কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গৌহাটিস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার তানভীর মনসুর এবং ধুবড়ি আদালতের আইনজীবী ও আসাম ট্রিবিউনের সম্পাদক রাজর্ষী দাসগুপ্ত আদালতের আদেশের বিষয়টি তাকে নিশ্চিত করেছেন।

গত ৩ মে দেশে ফেরার সময় ভ্রমণ ভিসা নিয়ে ভারতে যাওয়া ২৬ বাংলাদেশিকে আটক করে ভারতের ধুবড়ি জেলা পুলিশ। এদের একজন ভারতে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আটককৃতরা বৈধ পাসপোর্ট ও তিন মাস মেয়াদের ভ্রমণ ভিসায় ভারতে গিয়েছিলেন। করোনার কারণে লকডাউনের ফলে তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ধুবড়ি পুলিশ তাদের আটক করে।

অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ভারত সরকারের প্রসিকিউশন মামলাটি কলঅফ করার সম্মতি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে সকল পক্ষের আইনজীবীদের শুনানির পর ধুবড়ি আদালতের বিচারক জেলহাজতে আটক ২৫ জন বাংলাদেশিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি এবং মামলাটি নথিজাত করার আদেশ দেন। এর মধ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার হলো। এখন অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে তারা দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময় কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ২৬ বাংলাদেশি ভারতে যান। বৈধ পাসপোর্ট ও ভ্রমণ ভিসা থাকলেও ভারতে দ্বিতীয় ধাপের লকডাউন চলার মধ্যে গত ২ মে ওই ২৬ জন বাংলাদেশি দুটি মিনিবাসে আসামের জোরহাট জেলা থেকে দেশে ফেরার উদ্দেশে রওনা দেন। পশ্চিমবঙ্গের চেংরাবান্ধা চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা ছিল তাদের। ভারতে জেলে ও খামারকর্মী হিসেবে কাজ করা এসব বাংলাদেশিকে পরদিন (৩ মে) সকালে বাহালপুর এলাকা থেকে আটক করে আসামের ধুবড়ি জেলা পুলিশ। করোনা পরীক্ষার পর তাদের পাঠানো হয় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে।

গত ৫ মে ওই ২৬ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং ফরেনার্স (সংশোধিত) অ্যাক্ট, ২০০৪ এবং পাসপোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৬৭’র ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দেশটির পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাসপোর্টধারী এসব বাংলাদেশি টি-ওয়ান ভিসা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এই ভিসাধারীদের কাজের অনুমতি না থাকলেও আসাম পুলিশের অভিযোগ, এই বাংলাদেশিরা রাজ্যের জোরহাট, গোলাঘাট ও শিবসাগর এলাকায় কর্মসংস্থান কার্যক্রমে যুক্ত থেকে ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেছেন।

অপরদিকে তাদের মুক্তির দাবিতে কুড়িগ্রামে একাধিকবার মানববন্ধন করেন আটক ব্যক্তিদের স্বজনরা। এর মধ্যে গত ১ জুলাই কারা হেফাজতে বকুল মিয়া নামে এক বাংলাদেশি মারা গেলে চারদিন পর তার মরদেহ দেশে স্বজনদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। এখন ২৫ জনের মুক্তির আদেশ দিয়েছেন সে দেশের আদালত। এখন প্রিয়জনদের দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজনরা।


বিভাগ : বিশ্ব


এই বিভাগের আরও