ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

২১ এপ্রিল ২০২২, ০২:৪৯ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ পিএম


ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আল-আমিন মিয়া:
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় অবস্থিত এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া একই দিনে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বাস্তবায়িত ১৪ তলা বিশিষ্ট বিসিক প্রধান কার্যালয় (নতুন) ও মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী (সম্প্রসারণ) সহ মোট চারটি প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সারকারখানায় আয়োজিত ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনসহ চারটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন।

পলাশ প্রান্ত থেকে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপির সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানাসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। চারটি প্রকল্পের মধ্যে অন্য দুইটি হলো বিটাকের কার্যক্রম শক্তিশালী করার লক্ষ্যে টেস্টিং সুবিধাসহ টুল ইনস্টিটিউট স্থাপন ও বিএসইসির এলইডি লাইট (সিকেডি) এ্যাসেমব্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প। বিসিকের কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও উন্নত কর্মপরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তেঁজগাও এলাকায় নির্মিত হয়েছে ১৪ তলা বিশিষ্ট বিসিক প্রধান কার্যালয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বিসিকের মতিঝিল অবস্থিত অফিস ভবনের সকল কার্যালয়সহ ঢাকার অন্যান্য সকল অফিস একই ভবনে স্থানান্তর এবং আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রকল্প অফিসসমূহ একই ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে ভাড়া বাবদ দেওয়া সরকারি অর্থ সাশ্রয় হবে। এছাড়া ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সারকারখানা দুটি চালু হলে বিদেশ থেকে আর সার আমদানি করতে হবে না। পাশাপাশি কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

আরও জানা যায়,বিসিক প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রায় ৫০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অফিস কক্ষ বা ওয়ার্ক স্টেশনের সংস্থান হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। বিসিক প্রধান কার্যালয়ে এক লাখ ২৬ হাজার ৯০০ বর্গফুট জায়গার সংস্থান রয়েছে। ভবনটি পরিবেশবান্ধব, এতে সোলার সিস্টেম, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং ব্যবস্থা ইত্যাদির সুব্যবস্থা রয়েছে। ভবনটির দুইটি বেইজমেন্টে ৬৪টি গাড়ি পার্কিং সুবিধা, চারটি প্যাসেঞ্জার লিফটসহ ১৪ তলা ভবন, মাল্টিমিডিয়া সুবিধাসহ বিভিন্ন সভা বা সেমিনার পরিচালনার জন্য চারটি কনফারেন্স বা সভাকক্ষ, সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর একই ভবনে সমন্বিতভাবে স্বল্প সময়ে সকল কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ, ভবনের নিচ তলায় কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য তিন হাজার ৮৪১ বর্গফুট জায়গায় পণ্য প্রদর্শনীর সংস্থান, মাল্টিমিডিয়া ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত তিনটি প্রশিক্ষণ কক্ষ, প্রত্যেক ফ্লোরে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়াশরুম এবং ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে অফিস ভাড়া বাবদ প্রতি বছর সরকারের প্রায় ৫০ (পঞ্চাশ) লাখ টাকা সাশ্রয় হবে।


বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ১৯৮৭ সালে মাদারীপুর জেলায় ১৬ দশমিক ৩৩ একর আয়তন বিশিষ্ট একটি শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করে। এ শিল্পনগরীর অধীনে বর্তমানে সেখানে ৯৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে তেলের মিল, বেকারি, আটা-ময়দা-সুজির কারখানা, পিভিসি পাইপ, ফার্নিচার ও অ্যালুমিনিয়াম কারখানা উল্লেখযোগ্য। শিল্পোদ্যোক্তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার আলোকে ২০১৪ সালে মাদারীপুর জেলায় আরও একটি শিল্পনগরী (মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ) প্রকল্প স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো, পরিবেশসম্মত শিল্পনগরী স্থাপনের মাধ্যমে শিল্প প্লটের চাহিদা পূরণ করা, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামো যেমন: ভূমি উন্নয়ন, রাস্তা, পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ ও পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ১৫৮টি প্লটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট স্থাপন করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তাসহ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখা। প্রকল্পটি ৫৩ কোটি ৯৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০ দশমিক শূন্য ৫৫ একর জমিতে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পটিতে মোট শিল্প প্লটের সংখ্যা ১৫৮টি এবং সাত হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রকল্পটিতে সম্ভাব্য শিল্প খাতগুলো হলো - খাদ্য ও খাদ্যজাত সামগ্রী, বস্ত্র ও বস্ত্রজাত সামগ্রী, অটোমোবাইল সার্ভিসিং, ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রিক্যাল সামগ্রী, সাইকেল ও মোটরসাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি, কাঠ ও স্টীলের আসবাবপত্র ও গবাদিপশুর খাদ্য তৈরি ইত্যাদি।



এই বিভাগের আরও