নরসিংদীতে বিনা বেতনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন যারা

২৩ এপ্রিল ২০২০, ০২:১৯ পিএম | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২২ পিএম


নরসিংদীতে বিনা বেতনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীতে বেসরকারি হাসপাতালের চাকুরি ছেড়ে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা সন্দেহজনক ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করছেন একদল তরুণ মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট বা চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ। বিনা বেতনে নিঃস্বার্থভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহে ছুটছেন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে। শুধুমাত্র পিপিই আর হ্যান্ড গ্লাভস পড়ে খুব কাছ থেকে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়া মানুষের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। তাদের সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়। জীবনবাজি রাখা এসব তরুণ টেকনোলজিষ্টরা পাচ্ছেন না সরকারের কোন অর্থ সহায়তা বা চাকুরির আশ্বাস।

জানা গেছে, নরসিংদী জেলার দুটি হাসপাতাল, ৫ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮২ জন সরকারি মেডিক্যাল অফিসার কর্মরত রয়েছেন। জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে রোগীর সেবা দেওয়ার জন্য ১ জন ডাক্তার এর বিপরীতে ৩ জন নার্স ও দুইজন মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট থাকার কথা। জেলা ও উপজেলায় নার্স পর্যাপ্ত থাকলেও নেই মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট। জেলার ৭ টি হাসপাতালে মাত্র  ৮ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট কর্মরত রয়েছেন। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই পদে পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকবল না থাকায় হিমসশম খাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

করোনার এই দুর্যোগে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট সোসাইটির একঝাঁক তরুণ, যারা জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কর্মরত। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চাকুরি ছেড়ে বিনা বেতনে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করার কাজ করছেন তারা।

বাংলাদেশে টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও    নরসিংদী জেলার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রানা বলেন, জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট মাত্র ১ জন অথবা দুইজন। দেশের এই দুর্যোগে জীবনবাজি রেখে প্রাইভেট চাকুরি ছেড়ে বিনা বেতনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এই সোসাইটির ১০ জন তরুণ নমুনা সংগ্রহের কাজ করছি। সরকার যদি আমাদেরকে প্রত্যেকটি সরকারি হাসপাতালে নিয়োগ দিতো আমরা আরো বেশি জনসাধারণের সেবা করতে পারতাম।   

নরসিংদী জেলা  হাসপাতাল (বর্তমানে যা কোভিড ১৯ আইসোলেটেড হাসপাতাল) এর আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক মিজানুর রহমান বলেন, এই দুর্যোগের মুহুর্তে অনেক লোকবল দরকার। তারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন। তাদেরকে সরকারি পর্যায়ে নিয়োগ দেয়া হলে রোগী, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবী মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট সবাই উপকৃত হবে।

নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, এই দুর্যোগ মোকাবেলায় তারা আমাদের সাথে কাজ করছে। আমরা ব্যাক্তিগতভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করব। আর সরকারের নিয়ম অনুযায়ী যখন সুযোগ আসবে তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুযোগ পাবে।



এই বিভাগের আরও