নরসিংদীতে ১১ দফা দাবিতে পুলিশের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ

০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০১ পিএম


নরসিংদীতে ১১ দফা দাবিতে পুলিশের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
১১ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পুলিশের বৈষম্যবিরোধী কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির ডাকা কর্মবিরতির অংশ হিসেবে নরসিংদীতে কর্মবিরতি পালন করছে অধস্তন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা। দাবি আদায়ে দোষী পুলিশের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করে পুলিশ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকাল ৪টায় নরসিংদী পুলিশ লাইনস মাঠে এ কর্মসূচি পালন করেন জেলার  ৬ শতাধিক পুলিশ সদস্য।

বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি কর্মসূচিতে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিগত ১৫ বছরে অধস্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিসিএস পুলিশ অফিসারদের বিভিন্ন অন্যায়ের কথা তুলে ধরে তাদের শাস্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ১১ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মে ফিরবেন না তারা।

এসময় তারা ‘বিসিএসের দালালি, চলবে না চলবে না’, ‘মন্ত্রীদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, বিপ্লবদের দালালি, চলবে না চলবে না, মনিরের দালালি চলবে না চলবে না, আইজিপির দালালি, চলবে না চলবে না, হৈ হৈ রৈ রৈ দালাল ডিবি হারুন গেলি কৈ, আমার ভাই মরলো কেন, জবাব চাই জবাব চাই’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

বিক্ষোভে কর্মসূচিতে তারা বলেন, 'আমরা দেশবাসীর শত্রু হতে চাই না। আমরা জনগণের বন্ধু হতে চাই। আমরা তাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের হয়ে কাজ করতে চাই। রাজনৈতিক মন্ত্রী-এমপিদের কাছ থেকে সুবিধা পেয়ে অনেক দালাল পুলিশ অফিসার আমাদের যেমন খুশি যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করেছেন। আমরা আর এসব দলাদলিতে থাকতে চাই না। পুলিশ বাহিনীর দালালদের কারণে আমরা এবং আমাদের পরিবার এখন অনিরাপদ। পুলিশ সদস্যদের পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।

বিক্ষোভ মিছিলে অধস্তন পুলিশ কর্মকর্তা সদস্যদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জেলার পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি সারা বাংলাদেশের পুলিশের দায়িত্ব কি নিতে পারবো? আমি সবসময় আপনাদের সঙ্গে থেকেছি। আমার সন্তানরা আমার কাছে যেমন, প্রত্যেকটা পুলিশ সদস্য আমার কাছে তেমন। আশা করছি শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে আমরা ঘুরে দাড়াঁবো।

এসময় নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস.এম. ফজল-ই খোদা পলাশ (প্রশাসন ও অর্থ) ও শামসুল আরেফিন (ডিএসবি) এর উপস্থিতি দেখা যায়। কর্মসূচী পালনকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত পুলিশ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

পুলিশের ১১ দফার মধ্যে রয়েছে-

১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে সকল পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের বিচার।

২. বাংলাদেশ পুলিশ কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দলের অধীনে কাজ করবে না; পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে জনগণের সেবা তথা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকবে।

৩. সারাদিন ৮ ঘণ্টার বেশি ডিউটি করানো যাবে না।

৪. অধস্তন কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোনো অবৈধ বা মৌখিক আদেশ পালন করবে না।

৫. অধস্তন কর্মচারীদের পদোন্নতি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদোন্নতির মতো অবলম্বন করতে হবে।

৬. বাৎসরিক নৈমিত্তিক ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিন করাতে হবে।

৭. ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মত অধস্তন কর্মচারীদের সোর্স মানি দিতে হবে।

৮. বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে ১০ তারিখের মধ্যে টিএ এবং ডিএ বিল পরিশোধ করতে হবে।

৯. নতুন বেতন স্কেল প্রণয়ন করতে হবে।

১০. ঝুঁকি ভাতা বাড়াতে হবে।

১১. পুলিশ হেডকোয়ার্টারস থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেকটি পুলিশ লাইন্স, থানা, ফাঁড়ি, গার্ড, ক্যাম্পের নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করে নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে।



এই বিভাগের আরও