নরসিংদীতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী বুলবুলের বাড়িতে শোকের মাতম

২৬ জুলাই ২০২২, ০৪:০৮ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম


নরসিংদীতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী বুলবুলের বাড়িতে শোকের মাতম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে সোমবার দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত মেধাবী শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একজন বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করার স্বপ্ন ছিল বুলবুল আহমেদ ও তার পরিবারের। একমাত্র বড় ভাইয়ের উপার্জন ও বুলবুলের পাঠানো টিউশনির টাকায় চলতো তাদের পিতৃহীন নিম্নবিত্ত পরিবারটি। হঠাৎ এমনভাবে দুর্বৃত্তের হাতে বুলবুলের খুন হওয়াকে পরিকল্পিত হত্যা মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা।

শাবিপ্রবির লোক-প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ নরসিংদী সদরের চিনিশপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত ওয়াহাব মিয়ার ছেলে।

মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ভাইকে হারানোর শোকে আহাজারি করছেন বড় বোন সোহাগী আক্তার। স্বপ্ন ছিলো, ভাই বুলবুল বিসিএস ক্যাডার হয়ে পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করবে। হাল ধরবে ৭ মাস আগে মারা যাওয়া পিতা ওয়াহাব মিয়ার নিম্নবিত্ত সংসারের। কিন্তু দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সেই স্বপ্ন মুছে গেলো নিমিষেই।

ছেলেকে নিয়ে বড় স্বপ্ন থাকলেও এখন ছেলের লাশের অপেক্ষায় থাকা মা ইয়াসমিন বেগম বিলাপ করছেন। সোমবারই মায়ের কাছে নতুন জুতা কেনার জন্য টাকা চেয়েছিলেন ছেলে বুলবুল। নিম্নবিত্ত মা ছেলের সেই জুতা কেনার শখও পূরণ করতে পারেননি বলে বারবার আফসোস করে একই প্রলাপ বকছেন।

ছিনতাইকারীরা এই হত্যাকানণ্ড ঘটিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন দাবী করলেও এর পেছনে অন্য কোন কারণ আছে এবং এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবী পরিবারের। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি তাদের। এদিকে বুলবুল হত্যার প্রতিবাদে চিনিশপুরে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। 

মেধাবী শিক্ষার্থী বুলবুল ২০১৬ সালে নরসিংদী সদরের কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১৮ সালে আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। একই বছর ডিসেম্বরে ভর্তি হন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে।

চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান তুহিন বলেন, গত ৭ মাস আগে মারা যান বুলবুলের পিতা ওয়াহাব মিয়া। তারপর একমাত্র বড় ভাইয়ের বেসরকারি চাকুরি ও বুলবুলের টিউশনির টাকায় চলত তাদের ৫ সদস্যের নিম্নবিত্ত সংসার। মেধাবী ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন।