হত্যা মামলার আসামীদের ফাঁসাতে সাক্ষী গুলিবিদ্ধ হওয়ার নাটক

১৫ অক্টোবর ২০২২, ০৩:৩২ পিএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৪ এএম


হত্যা মামলার আসামীদের ফাঁসাতে সাক্ষী গুলিবিদ্ধ হওয়ার নাটক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীতে হত্যা মামলার আসামীদের ফাঁসাতে নিজের শরীরে নিজেই ছুরিকাঘাত ও চামড়ার ভেতরে লোহার টুকরো রেখে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবী করে নাটক সাজিয়েছিলেন মামলার এক সাক্ষী। পুলিশী তদন্তে এমন নাটকীয়তার তথ্য প্রমাণ বের হয়েছে।

শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন।

এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে সজিব মিয়া (৩০) নামের এক ব্যক্তি হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দাবি করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এসময় তিনি হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার জেরে আসামীদের হামলায় আহত হয়েছেন বলে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আল আমিন জানান , ২০১৫ সালে নরসিংদীর শিবপুরে আরিফ পাঠান নামে এক ইউপি সদস্য হত্যা মামলার সাক্ষী সজিব মিয়া গত ১১ অক্টোবর আদালতে মামলার সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য দেয়ার পরদিন ওই হত্যা মামলার ৪ আসামীর নাম উল্লেখ করে জীবননাশের হুমকিতে আছেন দাবী করে মাধবদী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর গত শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে মাধবদী থানাধীন পাঁচদোনা এলাকার নির্জন একটি পুকুরপাড়ে গিয়ে মামুন নামে তার এক বন্ধুর সহায়তায় পরিকল্পনা অনুযায়ী ছোট চাকু দিয়ে নিজের বুকের ডানপাশে নিজেই ছিদ্র করে চামড়ার ভেতরে লোহার ছোট টুকরা ঢুকায় সজিব। ঘটনার পর বন্ধু মামুনের সহায়তায় জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে স্বজন, ডাক্তার এবং সাংবাদিকদের সামনে দাবী করেন ইউপি সদস্য হত্যা মামলার সাক্ষ্য দেয়ায় ওই মামলার আসামীরা হামলা চালিয়ে তাকে গুলি করে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢামেকে প্রেরণ করেন। ঢামেকে নেয়ার পর কোনো প্রকার অস্ত্রোপাচার ছাড়াই

আহত সজিবের বুকের চামড়ার নিচ থেকে লোহার টুকরো বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছাড়পত্র দেন চিকিৎসক।

পরবর্তীতে পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল এলাকার আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজে অন্যান্য কাউকে দেখতে পাননি। এসময় সজিব ও তার বন্ধুকে স্বাভাবিকভাবে হেটে যেতে দেখেন এবং এরকম ঘটনার কোন আলামত না পেয়ে নাটকীয়তার রহস্য পায় পুলিশ। পরে মামুনের মুখোমুখি করা হলে পুলিশের কাছে সাক্ষী সজিব মিয়া প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে এই নাটক সাজিয়েছেন বলে পুলিশের নিকট স্বীকার করেন।

সাক্ষী সজিবের বন্ধু মামুনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং সাক্ষী সজিব অসুস্থ থাকায় তাকে নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ।



এই বিভাগের আরও