আমদানির চেয়ে রফতানি কম হওয়ায় দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ১৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাড়ালো

১৬ অক্টোবর ২০১৯, ১২:২২ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ পিএম


আমদানির চেয়ে রফতানি কম হওয়ায় দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ১৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাড়ালো

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বহির্বিশ্বের সঙ্গে পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। আমদানির চেয়ে রফতানি কম হওয়ায় এ ঘাটতি। চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬ হাজার ৭২৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মতো বড় বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানিতে জোগান দিতে হচ্ছে। এতে করে আমদানি ব্যয় যেভাবে বেড়েছে, সেই হারে রফতানি আয় হয়নি। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের করা হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৬৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানিবাবদ ব্যয় করেছে ৮৬২ কোটি ২০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে আগস্ট শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ১৯৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৪ টাকা ৭০ পয়সা ধরে) দাঁড়ায় প্রায় ১৬ হাজার ৭২৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ঘাটতির এ অঙ্ক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল ২১০ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় এবার ঘাটতি কিছুটা কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত রয়েছে, যা গত বছর ঋণাত্মক ছিল। আগস্ট শেষে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ৭০ লাখ ডলার ঋণাত্মক ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো- নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।

এদিকে আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বেতনভাতা-বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করা হয়েছে ১৫৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে ১০৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবায় বাণিজ্যে দেশে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের (২০১৮-১৯) একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ৩৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। দুই মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ৩০৪ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৭২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। রেমিট্যান্সে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৭৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ৪২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই বেড়েছে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ ও নিট বেড়েছে ৭ শতাংশ। একই সময়ে দেশের শেয়ারবাজারে ২ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, যা তার আগের অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ৫০ লাখ ডলার।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও