আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলে রক্তাক্ত মাতম নিষিদ্ধ

০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৪:৪৫ পিএম | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৮ এএম


আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলে রক্তাক্ত মাতম নিষিদ্ধ
পুরনো ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা। এ উপলক্ষে প্রতি বছর তাজিয়া শোক মিছিল বের করা হয়। এতে অনুষ্ঠিত পাইক (‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে যারা দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি নিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করেন) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে এক সমন্বয় সভায় এ ঘোষণা করেছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। সেই সঙ্গে ডিএমপির পক্ষ থেকে তাজিয়া শোক মিছিলে নেয়া হচ্ছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ শিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


সভায় জানানো হয়, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় আঞ্জুমানে হায়দারির আয়োজনে হোসনি দালান ইমামবাড়া থেকে শোক মিছিলের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর আশুরা পালন শেষ হবে।
সমন্বয় সভায় আশুরার শোক মিছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের প্রতি ১৩টি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। এগুলো হলো- (১) শোক মিছিলের নির্ধারিত রুট ও সময়সীমা (নির্ধারিত সময়ে শুরু ও শেষ) মেনে চলতে হবে। (২) তাজিয়া শোক মিছিলে কোনো পাইক যেন অংশ নিতে না পারে, সে বিষয়টি আয়োজক সংস্থা নিশ্চিত করবে। (৩) তাজিয়া শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের নিশানের উচ্চতা ১২ ফুটের বেশি হবে না। (৪) তাজিয়া শোক মিছিল ও অন্যান্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজক সংস্থা প্রতিটি সমবেত স্থানে পর্যাপ্তসংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করবেন। (৫) আয়োজক সংস্থা পর্যাপ্তসংখ্যক আইডি কার্ডসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ছবিসহ তালিকা সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনারের অফিসে পাঠাবেন।(৬) তাজিয়া শোক মিছিলে সব প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোরা, চাকু, তরবারি/তলোয়ার, বর্শা, বল্লবের ব্যবহার এবং আতশবাজি নিষিদ্ধ। পোশাকের সঙ্গেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। (৭) শোক মিছিল চলাকালীন রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলিগলি থেকে আগত লোকদের মিছিলে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। মিছিলে অংশগ্রহণ করতে হলে মিছিল শুরুর স্থানে যেতে হবে। (৮) শোক মিছিল শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সবাইকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে ঢুকতে দিতে হবে। তল্লাশি ব্যতীত কোনো অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে। (৯) শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইমামবাড়া ও শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সমাবেত স্থান এবং এর আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। সন্ধ্যার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। (১০) শোক মিছিলে উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করার ঢাকঢোল, বাদ্যযন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না। (১১) শোক মিছিল চলাকালীন সময়ে মিছিলের মধ্যে যেন কোনো গ্যাপ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। (১২) তাজিয়া মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় শক্তি প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তৈরি করা যাবে না। (১৩) শোক মিছিল ও আশুরাকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে কাউকে চাদর গায়ে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও