পৃথিবীতে এখনও খাদ্যের জন্য হাহাকার থেমে নেই: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ পিএম | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৮ এএম


পৃথিবীতে এখনও খাদ্যের জন্য হাহাকার থেমে নেই: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উপদেষ্টা বলেছেন, পৃথিবীতে এখনও খাদ্যের জন্য হাহাকার থেমে নেই । আমরা রেডিও, টিভি, ইউটিউব চ্যানেল এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি ফিলিস্তিনের গাঁজাতে শিশুরা খাদ্যের জন্য হাহাকার করছে, সেখানে আমরা কীভাবে বলতে পারি ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী আছে।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল শেরাটনে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে "গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) ২০২৪"-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন। অনুষ্ঠানটির থিম ছিল "ক্ষুধাশূন্য বাংলাদেশের পথে: বাঁধাসমূহ এবং অতিক্রমের উপায়"।

 

উপদেষ্টা বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রোটিন সাপ্লাইয়ের দিক থেকে সাপ্লাই সোর্স হিসেবে কাজ করছে। অনেকেই ইন্ড্রস্ট্রিয়াল ফার্মের কথা বলে থাকেন কিন্তু এখনো দেশের বিভিন্ন চরাঞ্চলে মহিলারা হাস, মুরগী, গরু, ছাগল লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তায় নারীর লোকজ জ্ঞানকেও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।

তিনি বলেন, রাস্তাঘাট বানানোর মতো অপরিকল্পিত উন্নয়ন খাদ্য জোগানে সবচেয়ে বড় বাধা। অনিরাপদ কৃষিচর্চার ফলে আমরা নিরাপদ খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করতে পারছি না। এতে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে না। মাছসহ বাংলাদেশে যে রকম প্রাকৃতিক খাদ্য বৈচিত্র্য আছে তা রক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। শস্য উৎপাদনে কীটনাশক ও হার্বিসাইড ব্যবহারের ফলে অসংক্রামক রোগ ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ব্যাধি বেড়েই চলছে। তাই এবিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। বাইরে থেকে খাদ্য আমাদানির বিরোধিতা করে উপদেষ্টা বলেন, মানুষ যদি নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করতে পারে কেবল তাহলেই বলা যাবে আমরা ক্ষুধা মিটাতে পারছি। সরকারের দিক থেকেও খাদ্য আমদানি করা উচিৎ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ক্ষুধা নিরসনে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২-এর প্রতিশ্রুতি পূরণ থেকে অনেক দূরে আছে। ক্ষুধার তালিকায় মধ্যম পর্যায়ের দেশ হিসেবে স্হান পেয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অগ্রগতি। তারা অপুষ্টি দূরীকরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সামগ্রিক কৌশলের পয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। জলবায়ু সহনশীলতা, শূন্য ক্ষুধা এবং জেন্ডার সমতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেলিগেশনস অব ইউরোপীয় ইউনিয়ন টু বাংলাদেশের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ড. মিহাল ক্রেইজা (Dr. Michal Krejza) । বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদুল হাসান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ হাসান, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর পঙ্কজ কুমার, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনিষ কুমার আগারওয়াল প্রমুখ।

উল্লেখ্য, জিএইচআই একটি পিয়ার রিভিউড বার্ষিক প্রতিবেদন, যা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে যৌথভাবে প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনটি বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং দেশীয় স্তরে ক্ষুধার পরিমাণ পরিমাপ এবং পর্যবেক্ষণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। জিএইচআই চারটি মূল সূচকের ভিত্তিতে দেশগুলোকে র‍্যাঙ্কিং করে তাহলো অপুষ্টি, শিশু মৃত্যুহার, শিশু উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, শিশু খর্বতা ।


বিভাগ : বাংলাদেশ