অগ্নিঝরা মার্চের শুরু

০১ মার্চ ২০২১, ১০:২১ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ পিএম


অগ্নিঝরা মার্চের শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ হবে এ মাসেই। বাঙ্গালির জীবনে নানা কারণে মার্চ মাস অন্তনির্হিত শক্তির উৎস। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। আবার এ মাসের ১৭ তারিখ টুঙ্গিপাড়ায় জন্মে ছিলেন তিনি।

বাংলাদেশে স্বাধীনতার মাস মার্চ এবার এসেছে ভিন্ন বার্তা নিয়ে। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত মুজিব বর্ষ ঘোষণা করা হলেও পরবর্তি সময় ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীও। এর সাথে যোগ হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চুড়ান্ত সুপারিশ। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী পালনের বছরে এ সুপারিশ জাতিকে উচ্ছাসিত করেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এ প্রাপ্তি আমাদের বিরাট অর্জন। করোনা আবহ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রীয়, সরকারি ও বেসরকরি পর্যায়ে এ মাসে অনুষ্ঠিত হবে নানা অনুষ্ঠান।

এর আগে একাত্তরের এ মাসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো; এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশা আল্লাহ। এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’

১৯৭১ এর ৭ মার্চ সাবেক রেসর্কোস ময়দান-আজকের সোহরাওর্য়াদী উদ্যানে দেয়া এই ঐতিহাসিক ভাষণের সময় মুর্হুমুহু গর্জনে উত্তাল ছিল জনসমুদ্র। লক্ষ কন্ঠের একই আওয়াজ উচ্চারিত হতে থাকে দেশের এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। ঢাকাসহ গোটা দেশে পত পত করে উড়ছিল সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের পতাকা।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠেছিল-সে আগুন যেন ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সর্বত্র। এর পরে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ‘৬২র শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬র ছয় দফা এবং ‘৬৯র গণঅভ্যুথানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙ্গালীর জীবনে নিয়ে আসে নতুন বার্তা।

একাত্তরের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এর আগে ২৫ মার্চ রাত একটার পরে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সৈন্যরা গ্রেপ্তার করে তার বাড়ি থেকে।

মূলত ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙ্গালীর কন্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে ‘অপারশেন সার্চলাইট’ নামে বাঙালি নিধনে নামে। ওই রাতে ঢাকার রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে তারা। নির্বিচারে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক হত্যা করা হয়।

এর পরের ঘটনা প্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা হয়। আবালবৃদ্ধবনিতা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে জাতি লাভ করে স্বাধীনতা।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও