ভারত থেকে টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

০৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৪:৫৩ পিএম | আপডেট: ০২ মে ২০২৪, ০৭:২৭ পিএম


ভারত থেকে টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, আন্তর্জাতিক চুক্তি থাকার কারণে ভারত থেকে টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার খবর আসার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া তারা কথা বলেছেন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের এদেশীয় এজেন্ট বেক্সিমকোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে।’

‘তাদের সঙ্গে কথার পরিপ্রেক্ষিতে এবং টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি থাকার কারণে আমরা আশাবাদী, (যথাসময়ে টিকা পেতে) কোনো সমস্যা হবে না’ বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের ওপর আমার আস্থা আছে। টিকার দাম বাবদ অর্থ ছাড়ের বিষয়টিও চূড়ান্ত পর্যায়ে। এটা প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার।

একই সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ভারতে টিকা রপ্তানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার প্রভাব বাংলাদেশের সঙ্গে হওয়া চুক্তির ওপর পড়বে না।

তিনি জানান, তার সঙ্গে বাংলাদেশে ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারের কথা হয়েছে। যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হচ্ছে, তা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে হওয়া চুক্তি। বাংলাদেশ যে চুক্তি করেছে, সেটা সরকারের সঙ্গে সরকারের। এটা আন্তর্জাতিক চুক্তি। নিষেধাজ্ঞার আওতায় সেটি পড়বে না।

সচিব বলেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দুশ্চিন্তারও কিছু নেই। তাছাড়া ভারত সরকার সেরামের টিকার অনুমোদন দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেতে আরও তিন সপ্তাহের মতো সময় লাগবে। বাংলাদেশে টিকা আসার যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, সে সময়ই টিকা আসবে।

এর আগে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানায়, ভারত কয়েকমাসের জন্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিয়েই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার অনুমোদন দিয়েছে।

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকাটি ভারতে উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনেওয়ালা এপি ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ভারতের ঝুঁকিতে থাকা জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে রপ্তানি করা যাবে না এই শর্তে জরুরি ব্যবহারে রবিবার সেরামকে টিকা উৎপাদনের অনুমোদন দেয় সরকার।

একই সঙ্গে বেসরকারি বাজারেও কোম্পানিকে টিকা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

পুনেওয়ালা বলেন, ‘আমরা এখন কেবল এই মুহূর্তে ভারত সরকারকে এই টিকা সরবরাহ করতে পারি।’ টিকার মজুদ ঠেকাতেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে প্রতিবেদনে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হবে কিনা সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনার টিকা কেনার জন্য বাংলাদেশ সরকার, দেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে এই টিকা পাবে বাংলাদেশ। বিনামূল্যে এই টিকা দেবে সরকার। পাশাপাশি বেক্সিমকো বেসরকারিভাবেও ৩০ লাখ টিকা আনবে এবং প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১ হাজার ২০০ টাকা।


বিভাগ : বাংলাদেশ