নরসিংদী পাসপোর্ট অফিসের ভোগান্তির চিত্র পাল্টে দিলেন সাহজাহান কবির

০৭ মে ২০১৯, ০২:০৩ পিএম | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:১১ এএম


নরসিংদী পাসপোর্ট অফিসের ভোগান্তির চিত্র পাল্টে দিলেন সাহজাহান কবির

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
দালালের দৌরাত্ম্য কমানোসহ সেবা প্রত্যাশীদের সুবিধার্থে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নরসিংদীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। এতে বিগত সময়ের তুলনায় গ্রাহক হয়রানী বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি সেবার মান বেড়েছে পাসপোর্ট কার্যালয়টিতে। পাসপোর্ট কার্যালয়টিতে নতুন সহকারী পরিচালক সাহজাহান কবির এর যোগদানের পর থেকে পাল্টে গেছে পাসপোর্ট কার্যালয়ের পুরনো চিত্র। এর আগে গ্রাহক হয়রানীসহ নানা ভোগান্তির অপর নাম ছিল এ পাসপোর্ট কার্যালয়। গ্রাহক হয়রানী বন্ধ ও সেবার মান বৃদ্ধির এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

পাসপোর্ট গ্রাহকরা জানান, নাগরিকদের সহজে পাসপোর্ট সেবা দিতে ২০১০ সালে যাত্রা শুরু হয় নরসিংদীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের। বিগত সময়গুলোতে বিদেশ গমন, হজ্ব পালন, বিদেশ ভ্রমনে পাসপোর্ট সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত এখানে দালালদের দৌরাত্ম্য, অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়সহ নানা হয়রানির শিকার হতেন গ্রাহকরা। এতে সেবা বঞ্চিত হওয়াসহ আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো গ্রাহকদের।


দীর্ঘদিন পর হলেও বিগত তিন মাসে অনেকটা পাল্টে গেছে আঞ্চলিক এই পাসপোর্ট কার্যালয়ের চিত্র। কার্যালয়টিতে নতুন সহকারী পরিচালক সাহজাহান কবির যোগদানের পর সেবাপ্রত্যাশীদের সুবিধার্থে খোলা হয়েছে হেল্প ডেস্ক, অভিযোগ বক্স, জবাবদিহি বক্স, নাগরিক সেবাকেন্দ্র ও দালাল হয়রানি বন্ধে সতর্কবাণী। প্রতিবন্ধী গ্রাহকদের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ সেবা ব্যবস্থা, গ্রাহকদের অভিযোগ বা সমস্যা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গণশুনানী।

এছাড়াও জনবান্ধব সেবা প্রদানে কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা হয়েছেন আন্তরিক। পাশাপাশি অফিস চত্বরে সুন্দর ফুলের বাগানসহ পরিবেশের সৌন্দর্য্য বাড়ানো হয়েছে। সার্বিকভাবে আগের তুলনায় গ্রাহকসেবা বেড়েছে এখানে। প্রতিদিন গড়ে ২ শত ৫০ থেকে ৩ শত পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়ছে নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে। এতে সন্তুষ্টি ও আস্থা ফিরে এসেছে গ্রাহকদের মধ্যে। হয়রানী বন্ধ ও সেবার এ মান ধরে রাখার দাবী জানিয়েছেন গ্রাহকরা।


বেলাব উপজেলা থেকে আসা পাসপোর্ট গ্রাহক সাইফুল ইসলাম বলেন, কয়েকমাস আগেও এখানে এসে লম্বা লাইনে দীর্ঘ সময়ে দাড়িয়ে থেকেও কাজের কাজ হতো না। বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকায় দালালের স্মরণাপন্ন হলে সহজে কাজ হতো। এখন পাসপোর্ট করতে গিয়ে এমনটা হচ্ছে না।

নরসিংদীর চরাঞ্চলের আলোকবালী থেকে আসা গ্রাহক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমার পাসপোর্ট এর ডেমু সমস্যা ছিল। এ বিষয়ে সরাসরি এডি স্যারের সাথে কথা (গণশুনানী) বলেছি সমাধান হইছে। আগে পাসপোর্ট কর্মকর্তার সাথে কথা বলার সুযোগ ছিল না।

নরসিংদী শহরের দত্তপাড়া এলাকার নাজমুল হাসান রবিন বলেন, সেবার ধরণটা অনেকটা পাল্টে গেছে। দালালের দৌরাত্ম্য কমাসহ হয়রানী বন্ধ হয়ে সেবার মান বেড়েছে কিন্তু ঢাকা হতে পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে আসতে সময় লাগছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পাসপোর্ট গ্রাহক ফারুক মিয়া বলেন, বাড়তি টাকা খরচ করে আগে মাসের পর মাস ঘুরেও পাসপোর্ট পাওয়া যেতো না। এমন কী সমস্যাটাও জানা যেত না। এখন পাসপোর্ট অফিসের লোকজন কী কারণে বিলম্ব হয় সেটা জানায়, জবাবদিহিতা বেড়েছে অনেকটা।

যোগাযোগ করা হলে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নরসিংদীর সহকারী পরিচালক সাহজাহান কবির নরসিংদী টাইমসকে বলেন, “পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার, নি:স্বার্থ সেবাই আমাদের অঙ্গিকার” সরকারের এ স্লোগানে হয়রানী বন্ধ করে জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছি। এটা পাবলিক অফিস, এখানে এসে ছোটখাট কিছু ভুলভ্রান্তি বা বিশেষ করে অনেকেই ফরম পূরণ করতে পারেন না, বুঝেন না। তাদের একটু সমস্যা থেকেই যায়। আমি যেহেতু এখানে হেল্প ডেস্ক করেছি, সেখানে ইচ্ছে করলে যে কেউ ফরম পূরণ করতে পারছে, ডেস্কে যে আছে সে তাকে সহযোগিতা করছে। এখন বাইরে অপ্রত্যাশিত যে লোকজন (দালাল) আছে তাদের আনাগোনা আস্তে আস্তে কমে যাবে এবং এই চেষ্টাটা আমি একান্তই করছি। গ্রাহকদেরও সচেতন হতে হবে।

 



এই বিভাগের আরও