“হায়েনার হাসি” কাদাঁলো দর্শক

২৭ মার্চ ২০১৯, ০৮:১৩ পিএম | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৩:০৭ এএম


“হায়েনার হাসি” কাদাঁলো দর্শক

শরীফ ইকবাল রাসেল ॥
১৯৭১ সালে বর্বর পাকবাহিনীর দোসর দেলোয়ার রাজাকার নববধু ময়নাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায়। তুলে দেয় পাকবাহিনীর ক্যাম্পে, ময়নার উপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। নির্মমভাবে হত্যা করা হয় একজন বাউল ও তার স্ত্রীকেও।
এমনসব নির্মম ঘটনা ও হত্যাযজ্ঞের দায়ী জন্য রাজাকার দেলুর ফাঁসির দাবিতে মিছিল করে বাংলার প্রতিবাদী ছেলেরা।
এমন প্রেক্ষাপটে রাজাকার দেলোয়ারের দম্ভোক্তি “আমি ধর্মের কুলুক দিয়ে এদেশের মানুষকে পকেটে ভরে রেখেছি, আর তোমরা করবে আমার বিচার?
এমন দৃশ্যপট উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাটক “হায়েনার হাসি” এ।


২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে মঞ্চস্থ হয় নাট্যকার কামরুজ্জামান তাপুর পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় বাঁধন হারার পরিবেশনায় নাটক “হায়েনার হাসি”।
জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত সাংস্কৃতিক সংগঠন বাঁধন হারা থিয়েটার স্কুলের ২৬ জন নাট্যকর্মী নাটকটিতে অংশগ্রহণ করে।


নাটকটিতে তুলে ধরা হয়েছে ১৯৭১ সালের পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বর নির্যাতনের কাহিনী। তুলে ধরা হয়েছে বাঙালীর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার দৃশ্য। শুধু তাই নয়, পাকবাহিনীর সদস্যরা কিভাবে বাংলার শিশু, গৃহিনী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। আর এই নারকীয় তান্ডব থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে এদেশের যুবকদের যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছাশক্তি ও প্রশিক্ষণের বিষয়সহ শেষাংশে তুলে ধরা হয় একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের নির্যাতিত নারীদের আত্মচিৎকার।


তারা দাবী জানায়, তাদের নির্যাতনকারীদের বিচারের। নির্মম নির্যাতনের বিভীষিকা মনে করে বুকফাটা কান্নাজড়িত কন্ঠে একটাই আওয়াজ আমরা কী নির্যাতনের বিচার পাবো না? আমরা কি দেখতে পাবো না আমাদের বিচার?
বাংলার দামাল ছেলেরা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে খতম করে নির্যাতনকারী পাকবাহিনীর সদস্যদের। বাংলার রাজাকারদের ধরে এনে ফাঁিস কার্যকরের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করে দেশের স্বাধীন পতাকা উত্তোলন করা হয়।


এভাবেই নাটক মঞ্চায়ন শেষ হওয়ার সাথে সাথে চোখের অশ্রু মুছতে মুছতে মঞ্চে উঠলেন দর্শকসারিতে থাকা বাঁধন হারা থিয়েটার স্কুলের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন। এভাবেই কাঁদলেন নাটকের অন্যান্য দর্শকরাও।


নাটকের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে উঠলেন, এই নাটকটির মধ্যদিয়ে নতুন প্রজন্ম এদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানবে, জানবে দেশের অস্তিত্বকে। বুকে ধারণ করবে দেশের মমত্ববোধকে। আর এভাবেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সবশেষে বাঁধন হারার ৮ম জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন ও সকলের মধ্যে বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক।


বিভাগ : বিনোদন


এই বিভাগের আরও