জাতীয় বাজেটকে প্রভাবিত করতে তামাক কোম্পানির মিডিয়া ক্যাম্পেইন!

২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০২:৪৭ পিএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম


জাতীয় বাজেটকে প্রভাবিত করতে তামাক কোম্পানির মিডিয়া ক্যাম্পেইন!

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: 

আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধি না করার জন্য গণমাধ্যমে সংঘবদ্ধ প্রচারণা শুরু করেছে তামাক কোম্পানিগুলো। রাজস্ব হারানোর ভীতি সৃষ্টি করতে সিগারেট চোরাচালান ও অবৈধ বাণিজ্য বৃদ্ধির ভয় দেখিয়ে নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তারা। করারোপের মাধ্যমে সিগারেটের দাম বাড়ালে চোরাচালান ও অবৈধ বাণিজ্য বাড়বে এবং সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাবে, এই অসত্য প্রচারণাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিবছর বাজেটের আগে গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা/ক্যাম্পেইন করে থাকে।

এবারও তামাক কোম্পানিগুলো তাদের এসব দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে বিভিন্ন গবেষণার তথ্য-উপাত্ত বিকৃতভাবে গণমাধ্যমে তুলে ধরছে এবং একইসাথে তামাকবিরোধী সংগঠনের নাম ব্যবহার করে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য ছড়াচ্ছে। সিগারেটের রাজস্ব ফাঁকি/অবৈধ্য বাণিজ্য নিয়ে একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন তৈরি করে বিভিন্ন শিরোনামে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকা এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো, যেখানে তামাকবিরোধী গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নাম ব্যবহার করে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। তামাক কোম্পানির এই মিথ্যা প্রচারণায় দেশের কিছু শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিভ্রান্ত হয়ে এই অযৌক্তিক দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। উল্লেখ্য, অতিসম্প্রতি (ফেব্রুয়ারি, ২০১৯) বিশ্বব্যাংক তামাকপণ্যের অবৈধ বাণিজ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে বাংলাদেশে সিগারেটের অবৈধ বাণিজ্য ২৭টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম মাত্র ১.৮ শতাংশ। ভারতে যা ১৭ শতাংশ, পাকিস্তানে ৩৮ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ৩৬ শতাংশ এবং লাটভিয়ায় সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তামাকের ওপর কর বাড়ানোর সঙ্গে অবৈধ বাণিজ্য বাড়ার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি প্রশাসনিক। যেহেতু সিগারেটের অবৈধ বাণিজ্য ও চোরাচালান দেশের দুর্বল প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা ইঙ্গিত করে, সেহেতু তামাক কোম্পানির ফাঁদে পা দিয়ে এর স্বপক্ষে কোনো ধরনের বক্তব্য প্রদান কিংবা বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রকাশ নীতিনির্ধারক ও জনমনে ভুল বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বাংলাদেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ২০১৬ সালে সংগৃহীত বিভিন্ন দেশের সিগারেটের (২০ শলাকা প্যাকেট) গড় মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সবচেয়ে কমদামি সিগারেটের মূল্য বাংলাদেশের কমদামি সিগারেটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। কাজেই বাংলাদেশে তামাকপণ্যের ব্যাপক চোরাচালান কিংবা ব্যাপকভিত্তিতে সিগারেটের অবৈধ বাণিজ্য হওয়ার সম্ভবনাও নেই। সুতারাং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর উচিত হবে তামাক কোম্পানি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে আসন্ন বাজেটে কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে সকল তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধি করা।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও